ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় আধুনিক দেশ গড়া অসম্ভব: শিক্ষামন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৫ ঘণ্টা, মে ৫, ২০১২
প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় আধুনিক দেশ গড়া অসম্ভব: শিক্ষামন্ত্রী

ঢাকা: বর্তমানে দেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত আছে সে ব্যবস্থা দিয়ে আধুনিক বাংলাদেশ গড়া সম্ভব না বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) আয়োজিত সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে বিবিএ প্রথম ব্যাচের শির্ক্ষাথীদের সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দেশে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক পুরনো। তাই এ ব্যবস্থা দিয়ে আধুনিক বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব নয়। তাই আমরা শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। আশা করি আমরা প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে কোনো সর্বজনীন শিক্ষা নীতি নেই। আমরা একটি শিক্ষা নীতি তৈরি করেছি। এই নীতিতে সরকারি দল, বিরোধী দল, কৃষক, পেশাজীবী, চাকরিজীবী এবং ব্যবসায়ীদের মতামত নিয়েছি। দ্রুত আমরা এ শিক্ষা নীতি বাস্তবায়ন করবো। ’

নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘বর্তমানে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ব্যবসা শিক্ষার প্রতি ঝুঁকছে। কারণ ব্যবসা শিক্ষায় চাকরির বাজার অনেক। আমরা এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তাই ডিসিসিআই’র এ ধরনের বিবিএ কোর্স চালুর উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আশা করি দেশে এ রকম ভালো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষা দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। ’

তিনি বলেন, বিজ্ঞানের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ তৈরি করার জন্য ইতিমধ্যে আমরা গুরুত্বপূর্ণ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞানের ব্যবহারিক যন্ত্রপাতির অনেক অভাব। এমনকি কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাবরেটরিও নেই। তাই আমরা মোবাইল ল্যাবরেটরির মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করছি। এর ফলসরূপ গত দুই বছরে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি ঝুঁকেছে। ’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা ব্যবস্থায় যদি সমতা না থাকে তবে এক সময় দেখা যাবে একটি ক্ষেত্রেই মানুষ বেশি পারদর্শী হচ্ছে, কিন্তু তারা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাচ্ছে না। তাই বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষার মধ্যে আমরা একটি সমতা রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ’

শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা এবং মানবিক বিষয়ে লেখাপড়া করলেই হবে না। তাদেরকে দেশ থেকে দরিদ্র, দুর্নীতি ও পশ্চাতপদতার অবসান করে ভবিষ্যতে দেশকে নেতৃত্ব দেওযার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে বলেও তিনি জানান।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কোনো কর্মসূচি দেওয়া উচিত নয়। এসব পরিহার না করলে আমাদের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়বে এবং দেশও পিছিয়ে যাবে। ’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা অবহেলিত। দেশকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে যেতে চাইলে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে হবে। আমরা কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করার চেষ্টা করছি। ’

নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আগে শতকরা ৯ ভাগ শিক্ষার্থী স্কুলে আসতো না, ৩৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেণী পাস করে ঝরে পরতো এবং ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় থেকে ঝরে পরতো। এখন ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী স্কুলে আসে। আশা করি এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমরা তাদের মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারবো। ’
 
ডিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট আসিফ ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ ইন্সপেক্টর অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, ডিসিসিআই বিজনেস ইনস্টিটিউটের আহ্বায়ক এম এইচ রহমান, মো. হোসেন আলী, প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হায়দার আহমেদ খান ও খন্দকার শাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১২

এসএনএইচ/সম্পাদনা : আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad