ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

জেলিফিশের ব্যবহার সুনীল অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২২
জেলিফিশের ব্যবহার সুনীল অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে

কক্সবাজার: বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জেলিফিশ থেকে তৈরি হচ্ছে সার, কীটনাশক, ওষুধ ও কসমেটিক্সসহ নানান পণ্য। খাদ্য হিসেবেও জনপ্রিয় কিছু প্রজাতির জেলিফিশ।

বঙ্গোপসাগরের জেলিফিশ বাংলাদেশের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। প্রাণীটি দেশের সুনীল অর্থনীতিতে রাখতে পারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ব জেলিফিশ দিবস উদযাপন উপলক্ষে কক্সবাজারস্থ বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বিওআরআই) উদ্যোগে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বিজ্ঞানীরা এমন মতামত দেন।

‘জেলিফিশকে জানি, এই সামুদ্রিক সম্পদকে কাজে লাগাই’ শীর্ষক এই সেমিনারে বিজ্ঞানীরা বলেন, পৃথিবীতে প্রায় ২ হাজার প্রজাতির জেলিফিশ আছে। এরমধ্যে ১০/১২ প্রজাতির জেলিফিশ খাওয়া যায়। আর আমাদের বঙ্গোপসাগরেরও অন্তত একটি জেলিফিশ খাওয়ার উপযোগী।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের সেমিনার হলে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দারের সভাপতিত্বে সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. রাশেদ-উন-নবী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) মেরিন ফিশারিজ অ্যান্ড টেকনোলজি স্টেশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি অনুষদের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. এম. গোলাম মোস্তফা।

সেমিনারের কারিগরি পর্বে জেলিফিশের বায়োলজি, টক্সিন ও মানবকল্যাণ, জেলিফিশ ব্লুম সংরক্ষণ এবং প্রসপেক্টস ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করা হয়।

প্রফেসর ড. আশরাফুল আজম খানের সঞ্চালনায় কারিগরি পর্বে আলোচক ছিলেন সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, ভারতের আন্নামালা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. ব্রগদেশ্বরণ সুব্রানিয়াম, মেরিন ফিশারিজ অ্যান্ড টেকনোলজি স্টেশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান, পাঞ্জাবের লাভলী প্রফেশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি স্কলার অমিতা কুমারী চৌধুরী ও বোরির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শিমুল ভুঁইয়া।

সেমিনারে গত আগস্টে কক্সবাজার সৈকতে অসংখ্য জেলিফিশ ভেসে আসার ঘটনা তদন্ত করে বোরি’র পক্ষ থেকে একটি বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জুলাই মাসের শেষ দিকে বঙ্গোপসাগরে দূষণ ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জেলিফিশ ব্লুম ঘটে। এ সময় জেলেরা বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গেলে তাদের জালে মাছের পরিবর্তে জেলিফিশই অনেক বেশি ধরা পড়ে। কিন্তু স্থানীয় বাজারে এর কোনো অর্থনৈতিক মূল্য না থাকায় জেলেরা সেসব জেলিফিশ সমুদ্রেই ফেলে দেন। এরপর মরা জেলিফিশগুলো ভাসতে ভাসতে ১ আগস্ট থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত কক্সবাজার সৈকতের দরিয়ানগর থেকে লাবণী পয়েন্টে এসে পড়ে।

অনুষ্ঠানে সরকারি বেসরকারি দপ্তরের বিজ্ঞানী, শিক্ষার্থী, মৎস্যজীবী, পরিবেশকর্মী ও সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে আলোচকরা আরও বলেন, নামে মাছ হলেও জেলিফিশ আসলে মাছ নয়। স্থানীয় ভাষায় এটি ‘নুইন্না’ নামে পরিচিত। তাপমাত্রা বাড়ার কারণে সাগরে পানির লবণাক্ততা বেড়ে গেলে জেলিফিশেরা ব্যাপকভাবে প্রজন ঘটায়। এতে ধারণা করা হয়, ইংরেজি নামের চেয়ে স্থানীয় নুইন্না নামটিই বেশি বিজ্ঞানসম্মত।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২২
এসবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।