সাভার: এশিয়ার ন্যায্য বাণিজ্যের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাভারে শুরু হয়েছে ওয়ার্ল্ড ফেয়ার ট্রেড অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএফটিও) এশিয়া অঞ্চলের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন।
সাভারের খাগানে ব্রাক সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট এন্ড ম্যানেজমেন্টে সেন্টারে তিনদিন ব্যপী আন্তজাতিক এ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশের কুটির শিল্প সংস্থাগুলোর সমন্বয়ক একতা ফেয়ার ট্রেড ফোরাম (ইএফটিএফ)।
সকালে মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে সম্মেলনের উদ্ধোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিক।
সম্মেলনে ১২০ জনেরও বেশি দেশি বিদেশি প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ এশিয়ার নানা দেশের কুটির শিল্পের সাথে যুক্ত ব্যক্তি ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, ডব্লিউএফটিও-র প্রধান জনাব পল মেয়ার্স, ডব্লিউএফটিও-র এশিয়া প্রতিনিধি মিস ক্যারিবেল ডেভিড ও এশিয়া অঞ্চলের প্রধান জনাব চন্দ্র প্রসাদ কাছিপতি।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শিল্পোন্নত দেশগুলির রপ্তানি পণ্য, খাদ্য সামগ্রীর ক্রমবর্ধমান মূল্যের কারণে দরিদ্র দেশগুলোর ভবিষ্যত ক্রমশ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতির ফলে মানুষ আরো দরিদ্র ও ব্যাপক বেকারত্বের মুখে অসহায় হয়ে পড়েছে।
ক্ষুদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আনতে কুটির শিল্পের উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন সমাজ থেকে লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণেও এ শিল্প ভূমিকা রাখবে।
ডব্লিউএফটিও-র প্রধান পল মেয়ার্স তার বক্তব্যে কুটির শিল্প আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদেরকে জনগণের সামনে এই শিল্পের কার্যকারিতা ও উপযোগিতা তুলে ধরার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কুটির শিল্পে তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করতে উৎসুক মানুষের অভাব নেই, কিন্তু তারা আসলে জানেই না, কোথায় কিভাবে কোন ধরনের জিনিস পাওয়া সম্ভব।
বেসরকারি সংস্থা ‘সুযোগ’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থানা পরিচালক দারিন শাহনাজ সম্মেলনের মূল আলোচনা তুলে ধরেন। একতার পক্ষ থেকে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক শাহ আব্দুস সালাম।
শাহ আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, একতা ফেয়ার ট্রেড ফোরাম এবং বাংলাদেশে এর অঙ্গসংগঠনসমূহ দেশে কুটির শিল্পের উন্নয়নে এবং এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের দ্রব্যাদির প্রয়োজনীয় বাজারজাত সুবিধা ও রপ্তানির সুযোগ করে দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি জানান, ১৯৯০ সাল থেকেই ইএফটিএফ ক্ষুদ্র ও মাঝারি কুটির শিল্পের সঙ্গে কাজ করছে। বর্তমানে সংগঠনটি এর ৩৭টি অঙ্গসংগঠনের (যাদের ৭০ ভাগই রপ্তানিকারক) মাধ্যমে প্রায় এক লাখ ১৫ হাজার কুটির শিল্প কর্মীর (যাদের ৮০ ভাগই নারী) সঙ্গে যুক্ত থেকে এই শিল্পের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর শেষ হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া কুটির শিল্প নির্ভর গোষ্ঠীসমূহের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও তাদের ঐতিহ্যবাহী দ্রব্যাদি আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়ে যাওয় সহজ হবে বলে জানান আয়োজকরা।
বাংলাদেশ সময় ১৩৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১০