ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

উৎপাদনে ফিরেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এমারেল্ড অয়েল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
উৎপাদনে ফিরেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এমারেল্ড অয়েল

ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড উৎপাদনে ফিরেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে শেরপুরে অবস্থিত কারখানায় উৎপাদন শুরু করেছে কোম্পানিটি।

সম্প্রতি জাপানি বিনিয়োগে পরিচালিত মিনোরি বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনায় আনুষ্ঠানিকভাবে কারখানাটি থেকে স্পন্দন রাইস ব্রান অয়েল বাজারজাত হতে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল রেডিসনে এ উপলক্ষে স্পন্দন রাইস ব্রান অয়েলের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও মিনোরি বাংলাদেশের পরিচালক আফজাল হোসেন  বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আন্তরিকতায় এ বছর আমরা উৎপাদন শুরু করেছি। এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এবং তিতাস গ্যাস আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের সমস্যাগুলো সমাধান করে দিলে দেশে চলমান ভোজ্যতেলের সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারবে এমারেল্ড অয়েল।

তিনি বলেন, এমারেল্ড অয়েলের দুটি প্রোডাকশন ইউনিট আছে। এর একটির ধানের কুঁড়া ক্র্যাশ করার ক্ষমতা ১৮০ টন, অপরটির ক্ষমতা ১৫০ টন। ইউনিট দুটির দৈনিক মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৩৩০ টন। গ্যাসের অপর্যাপ্ত সরবাহের কারণে শুধু ১৮০ টনের ইউনিটটি সচল আছে। এই ইউনিটে ধানের কুঁড়া ক্র্যাশ করে ৩৫ মেট্রিক টনের মতো অপরিশোধিত তেল পাওয়া যায়। এখান থেকে দৈনিক পরিশোধিত তেল পাওয়া যায় প্রায় ২৬ মেট্রিক টন। এ সক্ষমতা নিয়ে আমরা প্রতিদিন প্রায় ২৬ মেট্রিক টন তেল বাজারজাত করতে পারব।

আফজাল হোসেন বলেন, ‘উৎপাদন শুরুর মাত্র ছয় মাসের মধ্যে আমরা ব্রেক ইভেনে চলে আসছি। দিনের পুরো সময় গ্যাস সরবরাহ পেলে আমরা পুরোদমে উৎপাদনে ফিরতে পারব। এমন সহায়তা পেলে আশা করছি খুব শিগগিরই শেয়ারহোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশ দিতে পারব।

তিনি আরও বলেন, ‘উৎপাদন শুরুর পর আমাদের দুটি বাঁধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রথমটি হলো গ্যাসের সংকট। দ্বিতীয়টি ব্যাংক ঋণ পুনঃতফসিল। কোম্পানিটি যখন বন্ধ হয়ে যায়, তখন তিতাস গ্যাসের কাছে বকেয়া ছিল ৩২ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ২০২১ সালে তিতাস গ্যাস লাইনচার্জসহ এক কোটি ৬৩ লাখ টাকা বকেয়া বিলের একটি স্টেটমেন্ট দেয়। এ টাকার পুরোটাই শোধ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘অতীতে রেকর্ডকৃত এই কোম্পানির লাভ বা ক্ষতি যাই হোক না কেন, আমাদের বিনিয়োগের মূল উদ্দেশ্য হল এটিকে একটি লাভজনক কোম্পানিতে পরিণত করা এবং বছরের শেষে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেওয়া। কোম্পানি পরিবর্তন হলেও আগের ব্র্যান্ড স্পন্দন নামেই তেল বাজারজাত করা হবে।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম ও মিনোরি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মিয়া মামুন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, ল্যাবএইড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল খাদ্য তত্ত্ববিদ ডা. নুসরাত জাহান দীপা, ল্যাবএইড হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিয়াক বিভাগের ডা. মো. লোকমান হোসেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম ও নির্বাহী পরিচালক মো: সাইফুর রহমান।  

এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ২০০৮ সালে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ২০১১ সালে স্পন্দন-ব্র্যান্ডেড রাইস ব্র্যান অয়েল উৎপাদন শুরু করে। ২০১৪ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করে।

লোকসান এবং কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা না করার কারণে কোম্পানিটির শেয়ার ২০১৮ সাল থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরির অধীনে লেনদেন করা হচ্ছিল। ২০১৬ সালে এমারেল্ড অয়েল ১৮ দশমিক দুই কোটি টাকা লাভ করে এবং শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয়।

২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে মিনোরি বাংলাদেশ নামে জাপানি একটি কোম্পানি এমারেল্ড অয়েলের ৭ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার কিনে মালিকানায় আসে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
এসএমএকে/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।