ঢাকা: কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজধানীতে ট্রাকে করে কৃষিপণ্য আনতে কৃষকদের অতিরিক্ত খরচ করতে হয়। এটাকে কীভাবে কমানো যায় সেজন্য জেলাপ্রশাসকদের সহযোগিতা চেয়েছি।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলাপ্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সবসময় খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল। যদিও আমাদের জলবায়ু-মাটি উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। আমরা আধুনিক ও বিজ্ঞান ভিত্তিক কৃষিতে যেতে পারিনি বলে আমাদের খাদ্যের ঘাটতি ছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে অনেকগুলো কর্মসূচি নিয়েছে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়ার জন্য। সারের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমানো হয়েছে। কৃষকদের ১৬টি কৃষি পণ্যে ৪ শতাংশ সুধে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। পানির প্রাপ্যতা, বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ হয়েছে। ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ হলো কৃষিপণ্য বিক্রি করে কীভাবে কৃষকরা লাভ করতে পারে, যা দিয়ে চাষিদের আয় বাড়ে জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পায়। কৃষি খাতের উন্নয়ন হলে অর্থনীতির অন্যান্য খাতের উন্নয়ন তরান্বিত হয়। সে লক্ষ্যে কৃষি পণ্যের বাজার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে হলে আন্তর্জাতিক বাজারের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবার দিতে হবে, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খাবার দেওয়া যাবে না। সেটি করতে হলে আমাদের গুড অ্যাগ্রিকালচারাল প্র্যাক্টিসেস (গ্যাপ) করতে হবে। এ জন্য আমরা এখন কাজ করছি।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, দিনাজপুর, ঈশ্বরদী কিংবা সাতক্ষীরায় ফসল হলো, চাষি মাঠ পর্যায়ে বিক্রি করে ১৫ টাকা পাচ্ছেন প্রতি কেজিতে। ঢাকায় এসে সেটা কেন ৪০-৪৫ টাকা হবে? এটা হলো মধ্যস্বত্বভোগী বা ফরিয়া। সারা পৃথিবীতেই মধ্যস্বত্বভোগী আছে। এর বাইরেও আরও কিছু আছে অপ্রত্যাশিত। বিভিন্ন জায়গায় ট্রাক বা পরিবহনে অতিরিক্ত খরচ করতে হয়। এটাকে কীভাবে কমানো যায়, এখানে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি। প্রত্যেক ডিসিই বলেছেন, তারা দায়িত্ব নেবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছেন, তারা একটি স্টাডি আমাদের সাথে করবেন। একটা ট্রাক ঈশ্বরদী বা দিনাজপুর থেকে এলে এটি ঢাকায় এসে প্রকৃত অর্থে কত দাম পেলো। ট্রাকের খরচ বা কোথাও চাঁদাবাজির স্বীকার যদি তারা হয়ে থাকে তাহলে কত টাকা কোথায় দিল, সেটা আমরা বের করব। বের করে তারপর আমরা চেষ্টা করবো জাতীয় পর্যায়ে একটি ব্যবস্থা নিতে, যাতে এটি বন্ধ করা যায়। বিষয়টি আজ তুলে ধরেছি আর ডিসিদের সহযোগিতা চেয়েছি।
বিদেশে কৃষিপণ্য রপ্তানি করতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যাওয়ার জন্য ভ্যাপার হিট ট্রিটমেন্ট করে, যেমন আমের পোকামাকড়। আমরা একটি উদ্যোগ নিয়েছি, আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপনের। সেখান থেকে তারা একটি সার্টিফিকেট দেবে। পূর্বাচলে প্রধানমন্ত্রী ২ একর জমি দিয়েছেন। সেখানে আমরা ল্যাবরেটরি এবং প্যাকিং হাউজ করছি, এর মাধ্যমে আমাদের বিভিন্ন পণ্য বিদেশে নিতে পারি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ