ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

৯০০ কি.মি. নৌপথ উন্নয়নে বাড়ছে বিশ্বব্যাংকের ঋণ

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০
৯০০ কি.মি. নৌপথ উন্নয়নে বাড়ছে বিশ্বব্যাংকের ঋণ ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন উন্নয়ন ও নৌরুট সচল রাখতে চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ নৌরুটে ৯০০ কিলোমিটার ড্রেজিং করা হবে। পাশাপাশি টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক উন্নয়ন করবে সরকার।

 

প্রকল্পের কাজে বিশ্বব্যাংক আরও ১৭২ কোটি ৮০ লাখ টাকা দিচ্ছে। ফলে সংস্থার মোট ঋণ দাঁড়াচ্ছে ৩ হাজার ৫২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অন্যদিকে সরকারি অর্থায়ন ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা কমে মোট দাঁড়াচ্ছে ২৯৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা।  

সরকারি ব্যয় কমানো এবং বৈদেশিক ঋণ বৃদ্ধির জন্য প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সংশোধনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।  

মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) একনেক সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে। গণভবন থেকে একনেক সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।  

সংশোধিত অংশ পাস হলে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াবে ৩ হাজার ৩৪৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা।  

প্রকল্পটি ২০১৬ সালের পয়লা জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে সম্পন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। একনেকে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সিনিয়র সহকারী প্রধান (নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়) মো. নাজমুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পটি সংশোধনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এর আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-আশুগঞ্জ নৌপথের গভীরতা বৃদ্ধি, জেটি, ঘাট ও পন্টুন স্থাপন, বিভিন্ন স্থানে নৌবন্দর উন্নয়ন, যাত্রী টার্মিনাল নির্মাণ এবং সদরঘাট নৌ- টার্মিনালের ওপর চাপ কমাতে অত্যাধুনিক করে ঢাকায় শ্মশানঘাট যাত্রী টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সদরঘাটের ওপর চাপ অনেকটাই কমে যাবে। ঢাকা-আশুগঞ্জ-চট্টগ্রাম নৌ-করিডোর বাংলাদেশের প্রধান অভ্যন্তরীণ নৌ-বাণিজ্যিক রুট, যা আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

এই নৌ করিডোর বরাবর ৬টি স্থানে নৌযানসমূহের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে ষাটনল, চরভৌরবী, চাঁদপুর, মেহেন্দীগঞ্জে, সন্দ্বীপ ও নলচিরা স্থানকে নির্বাচন করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় চারটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে। পানগাঁও ও আশুগঞ্জ টার্মিনাল উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ভৈরব বাজার, আলু বাজার, হিজলা, হরিণা, মজু চৌধুরী, ইলিশা (ভোলা) ভেদুরিয়া, লাহারহাট, বদ্দারহাট, দৌলতখাঁ, চেয়ারম্যান ঘাট, সন্দ্বীপ, তজুমদ্দিন, মনপুরা, এবং তমুরদ্দিনে ১৫টি লঞ্চ ল্যান্ডিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে।

ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল এবং ভোলা জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

৩০০ কিলোমিটার দৈর্ঘের এই রুটে বরিশালসহ অন্যান্য রুটের সংযোগ রয়েছে। এ রুটের সঙ্গে সংযুক্ত নারায়ণগঞ্জ এবং বরিশাল যুক্ত হলে মোট নৌপথের দৈর্ঘ দাঁড়াবে ৯০০ কিলোমিটার। দেশের ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথের মধ্যে সবচেয়ে ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জ-পানগাঁও হয়ে ঢাকা- আশুগঞ্জ পর্যন্ত নৌ রুটের দৈর্ঘ্য ৯০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রায় ৮০ কিলোমিটার অংশ হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে। ডুবোচরের কারণে সন্দ্বীপের পশ্চিমে ভাসানচরের দক্ষিণে পানির গভীরতা কমে এসেছে আড়াই মিটার থেকে ছয় মিটারের মধ্যে। এই অংশ জাহাজ চলাচলে অনুপযুক্ত হয়ে পড়ায়য় ভাসানচরের দক্ষিণে জেগে ওঠা ঠেঙ্গারচর নামে পরিচিতি পাওয়া আরও একটি নতুন চরের পড়েছে, যা বর্তমান রুট থেকে তিন কিলোমিটার গভীর সমুদ্রের দিকে।

বঙ্গোপসাগরের মেঘনা অববাহিকায় অতিরিক্ত পলির কারণে নাব্যতা সংকটে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৮০ শতাংশ পণ্য পরিবহনকারী ঢাকা-চট্টগ্রাম নৌ রুট। বঙ্গোপসাগরে কর্ণফুলী ও মেঘনা নদীর মোহনার সংযোগস্থল সন্দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে ভাসানচর, ঠেঙ্গারচরসহ আরও কিছু ডুবোচর জেগে ওঠায় কয়েক দশকের পুরনো নৌ রুটের বঙ্গোপসাগর অংশ কমপক্ষে তিন কিলোমিটার দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এসব কারণেই মূলত প্রকল্পটি সংশোধন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০
এমআইএস/এজে
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।