ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

২০০ এসি বাস দিতে এক বছর সময় চায় ভারত

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১৮
২০০ এসি বাস দিতে এক বছর সময় চায় ভারত বিআরটিসি বাস

ঢাকা: বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন(বিআরটিসি) ভারত থেকে ২০১৬ সালের আগস্ট থেকে ২০১৮ সালের মধ্যেই ৬০০ বাস কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। বাসগুলো এসি, ননএসি, সিঙ্গেল ডেকার ও ডাবল ডেকার। তবে এরমধ্যে ২০০ এসি বাস কেনার অনুমোদন দেয়নি ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী ভারতীয় গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ২০০ বাস দিতে পারছে না। তবে ভারত বেঁধে দেয়া সময়ে চারশ’টি বাস দিতে পারবে।

 ২০০টি এসি বাস দিতে আরও এক বছর সময় চেয়েছে ভারত।
 
রোববার(৬ মে) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন(বিআরটিসি) থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
 
বিআরটিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের আওতায় ভারত থেকে ৬০০ বাস ও ৫০০ ট্রাক কেনা প্রকল্প চলমান আছে। সবগুলোই নির্দিষ্ট সময়ে ভারত থেকে আসবে। তবে ২০০টি এসি বাস দিতে ভারত আরও এক বছর সময় চায়। এখনও ২০০টি এসি বাস কেনার বিষয়ে এক্সিম ব্যাংক অনুমোদন দেয়নি, বাকিগুলোর অনুমোদন পাওয়া গেছে।
 
তিনি আরও বলেন, ৪০০ বাস পেতে আগামী জুন মাসে ভারতকে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হবে। এর ৮ মাস পরেই ৪০০টি বাস পাওয়া যাবে। তবে বাকি ২০০টি এসি বাস পেতে আরও এক বছর সময় লাগবে, কারণ এক্সিম ব্যাংকের অনুমোদন মেলেনি। তবে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে না, শুধু সময় বাড়ছে।
  
সূত্র জানায়, বাসগুলো কিনতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, যার মধ্যে ৪৩৪ কোটি ৩২ লাখ টাকাই ইন্ডিয়ান লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) থেকে আসবে।
 
সূত্র জানায়, ভারতীয় ঋণে ‘ বিআরটিসি’র জন্য দ্বিতল, একতলা এসি ও ননএসি বাস সংগ্রহ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক। ৬০০টি বাস দেয়ার বিষয়ে ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক কারিগরি বিনিদের্শ(টেকনিক্যাল  স্পেসিফিকেশন) এর ৪৫টি শর্ত সংশোধন করার অনুরোধ করে। ফলে বাংলাদেশ কিছু শর্ত শিথিল করে বাস কেনার বিষয়ে। তবে এসব শর্ত গ্রহণ করেনি ভারতীয় ব্যাংকটি।
 
পরে ভারতীয় ব্যাংকটি প্রস্তাব করে যে, এমনভাবে প্রকল্পের ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) তৈরি করতে হবে যেন সকল ভারতীয় গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এই টেন্ডারে অংশ নিতে পারে।
 
তবে ভারতীয় সকল গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী বাস তৈরি করে না। কারণ দেশের সড়ক ও আবহাওয়ার সঙ্গে মিল রেখে ভারতের সকল প্রতিষ্ঠান গাড়ি তৈরি করে না। এই বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একাধিক বার সভা হয়েছে কোনো সুরাহা হয়নি।
 
সর্বশেষ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে চলতি বছরের ০২ এপ্রিল সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রকল্পের কার্যাবিরণী নিয়ে সভা হয়। সভায় ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক,ভারতীয় হাই কমিশন,  ইআরডি ও বিআরটিসি’র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ৩০০টি দ্বিতল ও ১০০টি একতলা নন এসি বাসের দরপত্র অনুমোদন পায়। অবশিষ্ট ২০০টি একতলা এসি বাস কেনার লক্ষ্যে দরপত্রের ‍ওপর ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক কোনো মতামত বা অনুমোদন দেয়নি। ফলে ২০০টি এসি বাস কিনতে আরও এক বছর সময় লাগবে।
 
প্রতিটি ৭২ লাখ টাকা দরে তিনশ’ ডাবল ডেকার, প্রতিটি ৬৯ লাখ টাকা দরে একশ’টি এসি সিঙ্গেল ডেকার, প্রতিটি ৭০ লাখ টাকা দরে একশ’টি সিঙ্গেল ডেকার এসি ইন্টারসিটি ও প্রতিটি ৪২ লাখ টাকা দরে একশ’টি সিঙ্গেল ডেকার নন-এসি বাস কেনা হবে। এসব বাসের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে ১২ বছর। ভারতীয় কোম্পানি অশোক লেল্যান্ডের কাছ থেকে বাসগুলো কেনা হবে।
 
বিআরটিসি সূত্র জানায়, পুরনো ও অচল বাস প্রতিস্থাপন, ট্রাফিক সমস্যা সহজীকরণ ও ঢাকাসহ শহরতলীর বায়ু দূষণসহ পরিবেশ দূষণ কমানো হবে। বর্তমানে বিআরটিসি’র প্রায় ১ হাজার ৫৫২টি বাস চলাচল করছে,যার মধ্যে এলওসি লাইনের মাধ্যমে বাসগুলো কেনা হবে।
 
সূত্র জানায়, যাত্রী সাধারণের কাছে বিআরটিসি বাসের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু বাসের স্বল্পতার কারণে বিআরটিসি’র পক্ষে যাত্রীদের এ চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে ৬০০টি ভারতীয় বাস কেনা হবে।
 
ইতোমধেই ভারত থেকে  দুই বিলিয়ন ডলার (২০০ কোটি ডলার) নমনীয় ঋণ (এলওসি) পেয়েছে বাংলাদেশ। অবকাঠামো বিশেষ করে রেল,যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও তথ্য প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ এ অর্থ ব্যবহার করতে পারবে।
 
এসব কাজ বাস্তবায়নে অন্তত ৭৫ শতাংশ পণ্য ও সেবা অবশ্যই ভারত থেকে আমদানি করতে হবে। সেই শর্ত অনুযায়ীই ভারত থেকে কেনা হচ্ছে ৬০০ বাস।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪০ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৮
এমআইএস/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।