ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

অসৎ কর্মকর্তাদের চাকরির দরকার নেই 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৮
অসৎ কর্মকর্তাদের চাকরির দরকার নেই  বক্তব্য দিচ্ছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। ছবি: বাংলানিউজ

বেনাপোল (যশোর):  রাষ্ট্রের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার ক্ষেত্রে যারা সহযোগিতা করে তাদের প্রজাতন্ত্রের চাকরি করার দরকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। 

তিনি বলেছেন, ঠিকভাবে সরকারের রাজস্ব আদায়ে সহযোগিতা না করে যারা কতিপয় ব্যবসায়ীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজস্ব ফাঁকিতে হাত মেলান, সেসব দুনীতিবাজ কর্মকর্তাদের কাস্টমসে চাকরি করার দরকার নেই।  

শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টায় বেনাপোল কাস্টম হাউস ক্লাবে আমদানি-রফতানিকারকসহ বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

 

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আজ এখানে এসে কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ শুনতে হচ্ছে। এটা আমার জন্য লজ্জাজনক বিষয়।  

দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদরে চিহ্নিত করতে সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, অভিযুক্ত কাউকে পেলে ছাড় নেই। আমাকে অনেকে সদালাপী বলেন। আমি যেমন ভালোর ভালো তেমনি অনিয়মকারীর বিরুদ্ধে কঠোর। ব্যবসায়ীরা সঠিক নিয়মে রাজস্ব পরিশোধ করে সরকারের উন্নয়নে সহযোগিতা করেন। তাদের হয়রানি করা যাবে না।  

‘সরকারি কর্মকর্তা-কমচারীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যে বেতন হয় সেটা এই রাজস্ব খাত থেকে যায়। তবে সব পেশার মানুষ  সরকারকে কোনো না কোনোভাবে ট্যাক্স দিয়ে থাকেন। তাদের কর দেওয়ার বিষয়ে আরও সচেতন করে তুলতে হবে। ’ 

ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আসছে বাজেটে আমদানি পণ্যের শুল্কমূল্য নির্ধারণে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। যশোরে একটি কনটেইনার ডিপো নির্মাণের বিষয়েও ভাবা হবে। যাত্রীদের ভ্রমণ কর কমিয়ে সমন্বয় বা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার  বিষয়েও  আলোচনা করা হবে।  

বাণিজ্য সম্প্রসারণে বেনাপোল বন্দরের গতিশীলতা বাড়াতে অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বিষয়েও আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি।  

এর আগে আমদানি রফতানি নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে বক্তব্য দেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, বেনাপোল বন্দরে পণ্যের পরীক্ষাগার না থাকায় বাইরে থেকে পরীক্ষা করতে হয়। এজন্য ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যায়। কাস্টমসের অভ্যন্তরে ব্যাংক ক্লিয়ারিং হাউজ না থাকায় আমদানি শুল্ক পরিশোধে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয়। এছাড়া বন্দরে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় মূল্যবান পণ্য খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখতে হয়।  

যানজট প্রতিদিনের বড় সমস্যা উল্লেখ করে ব্যবসায়ীরা বলেন, অন্য বন্দরে কম মূল্যে পণ্যের রাজস্ব নেওয়া হলেও বেনাপোল বন্দরে ওই একই পণ্যের শুল্ক বেশি দিতে হয়। তাই এ বিষয়ে নজর দেওয়ার কথা বলেন তারা।  

বেনাপোল কাস্টম কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- এনবিআর সদস্য (শুল্ক নীতি ও আইসিটি) মো. ফিরোজ শাহ আলম, সদস্য (কর-নীতি) কানন কুমার রায়, মো. সদস্য (মূসক নীতি) রেজাউল হাসান।  

অন্যদের মধ্যে যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান, যশোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টকুন, বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন, বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা, বেনাপোল প্রেসক্লাবের সভাপতি মহসিন মিলন, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের বন্দর সাব কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২২০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৮
এজেডএইচ/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।