ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

এক বছরেই ৩৫ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে বিদেশি কোম্পানি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৮
এক বছরেই ৩৫ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে বিদেশি কোম্পানি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট ক্যাপ্টেন জিল্লুর রহমান। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: বিদেশে পণ্যবাহী বাংলাদেশের জাহাজ দিন দিন কমে যাচ্ছে। বর্তমানে ৭৮-৩৫টিতে নেমে এসেছে জাহাজের সংখ্যা। সরকারের কোনো জাহাজই নেই। সাম্প্রতিকালে এক বছরেই বাংলাদেশ থেকে পণ্যবহনকারী বিদেশি জাহাজ ৩৫ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। যা দেশের অর্থনীতির জন্য ব্যাপক ক্ষতি।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানা যায়।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট ক্যাপ্টেন জিল্লুর রহমান জানান, বিদেশগামী দেশের পণ্যবাহী জাহাজের সংখ্যা কমতে কমতে ২০১২ সালে ৭৮টি থেকে ৩৫টিতে এসে দাঁড়িয়েছে।

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশেষ আগ্রহ ও উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাতীয় পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজ শূন্য থেকে ৩২ এ উন্নীত করা হয়েছিলো। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, যে বর্তমানে সমুদ্রগামী শিপিং করপোরেশনের কোনো জাহাজ নেই। যে দু’টি জাহাজ রয়েছে তা ট্যাংকার, সমুদ্রগামী নয়। যা আছে তা বেসরকারি জাহাজ। এক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে জাহাজ ক্রয়ের ক্ষেত্রে উচ্চ ট্যাক্স (৩০ শতাংশ) আরোপ করায় ব্যবসায়ীরাও জাহাজ কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না। আর এ সুযোগে বিদেশি জাহাজ কোম্পানি এক বছরেই ৩৫ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশি মেরিনাররা বিদেশে চাকরি পাচ্ছেন না। কেননা, আগে অনেক দেশেই ‘ওকে টু অনবোর্ড’ সুবিধা দিলেও এখন দিচ্ছে না। এমনকি ভিসাও দিচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীরা পাস করে ভাল কোম্পানিতে চাকরি পেলেও জাহাজে চড়তে পারছেন না। ফলে দেশ বিরাট অঙ্কের রেমিট্যান্স হারাচ্ছে। কেননা, একজন মেরিনারের রেমিট্যান্স এক শ্রমিকের চেয়ে দশগুণ বেশি।

এদিকে দেশের সরকারি একাডেমি থেকে পাস শিক্ষার্থীরাই চাকরি পাচ্ছে না, তার ওপর গজিয়ে ওঠেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ফলে হাজার হাজার মেরিনার বেকার বসে আছে।

এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সংগঠনটি সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপন করে। এগুলো হলো- বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি ছাড়া সব বেসরকারি একাডেমি বন্ধ করে দেওয়া এবং নতুন সরকারি একাডেমি না খোলা। বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির ক্যাডেটদের জন্য নিজস্ব ম্যানিং এজেন্সি চালুকরণ। একটি শক্তিশালী রিসার্চ সেল তৈরি করা। যে সেল আন্তর্জাতিক বাজার সম্বন্ধে মনিটরিং করে ক্যাডেট সংখ্যা নির্ধারণ করবে এবং আইএমও নির্দেশনা সঠিকভাবে পালনের বিষয়টি পর্যাবেক্ষণ করবে।

আন্তর্জাতিক চাকরি বাজার বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাহামাস, পানামা, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইংল্যান্ড, লাইবেরিয়া, মালয়েশিয়াতে মেরিটাইম কাউন্সিলর নিয়োগ করা। কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়ে মেরিনারদের ভিসা সমস্যার সমাধান করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিপ ব্রেকিং অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী, ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সিনিয়র প্রেসিডেন্ট আশরাফ ইবনে নূর প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৮
ইইউডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।