ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

এলপি গ্যাসের নীতিমালা প্রণয়নের দাবি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৭
এলপি গ্যাসের নীতিমালা প্রণয়নের দাবি ইডব্লিউএমজিএল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলপি গ্যাসের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভেজাল রোধে সরকারের নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন এ খাতের সংশ্লিষ্টরা। সঠিকভাবে তদারকি নিশ্চিত করতে না পারলে সম্ভবনাময় এই খাতের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইডব্লিউএমজিএল মিলনায়তনে কালের কণ্ঠ আয়োজিত ‘বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলপি গ্যাসের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ গোলটেবিল বৈঠকে বক্তরা এসব কথা বলেন।  

কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলনের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম।

 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কালের কণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক মোস্তফা কামাল এবং কি-নোট উপস্থাপন করেন বসুন্ধরা এলপি গ্যাস ও সুন্দরবন ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (বিজনেস অপারেশন্স অ্যান্ড প্লানিং) প্রকৌশলী জাকারিয়া জালাল।  
 
আলোচক হিসেবে ছিলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ড. সেলিম মাহমুদ, কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম, ওরিয়ন গ্রুপের পরিচালক লে. জেনারেল (অব.) সাব্বির আহমেদ, বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেড ও বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের হেড অব মার্কেটিং এমএম জসিম উদ্দিন, বিজিএমইএ-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাছির, বিকেএমইএ-এর সাবেক প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম, রিহ্যাব ভাইস প্রেসিডেন্ট-১ লিয়াকত আলী ভূঁইয়া প্রমুখ।
 
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তাজুল ইসলাম বলেন, সরকার ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে হলে আমাদের বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার বাড়াতে হবে। জ্বালানি খুব অব্যবস্থাপনায় ছিল। এ বিষয়ে সরকারকে একটি কম্প্রিহেনসিভ প্রোগ্রাম নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। সে কারণে বিকল্প জ্বালানি সংযোজনেও ভাবতে হয়েছে সরকারকে।
  
এলপি গ্যাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রান্নাঘরে ব্যবহারের জন্য এলপি গ্যাস বিশ্বব্যাপী খুবই জনপ্রিয়। ট্রান্সপোর্টে অটোগ্যাস হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এটি। সব ধরনের গাড়িতেই এই গ্যাস ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে আগে ছিলো না, কারণ আমরা এলপি গ্যাস সর্ম্পকে বুঝতাম না।
 
সিএনজি প্রসঙ্গে তাজুল ইসলাম বলেন, সিএনজি এরই মধ্যে মানুষের মাঝে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কাজেই এটা একেবারে বন্ধ করা ঠিক হবে না। সিএনজি থাকুক, বিকল্প জ্বালানি হিসেবে যেসব আসছে সেগুলোরও প্রসার ঘটুক।
 
আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলপি গ্যাসের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ গ্যাসের সরবরাহ আগে নিশ্চিত করতে হবে। দেশে ১০৮ টির মতো ইকোনমিক জোন আছে। সেখানেও এলপি গ্যাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
‘অনেকে বলছেন সিএনজি একটা প্রতিবন্ধকতা, এলপি গ্যাস একটা প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু আমি কোনো প্রতিবন্ধকতা দেখছি না। কারণ ওই ১০৮টির মতো ইকোনমিক জোনে এলপি গ্যাস দিয়ে শেষ করা যাবে না। ’
 
এলপি গ্যাসের নীতিমালা প্রসঙ্গে ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশেই আমলারা নীতিমালা করে না, যা আমাদের দেশে করা হয়।  
 
ওরিয়ন গ্রুপের লে. জে. (অব.) সাব্বির আহমেদ বলেন, যারা দেশে এলপি গ্যাস উৎপাদন করছে আর যারা আমদানি করছে তাদের মধ্যে একটা সমন্বয় থাকা দরকার। তাছাড়া সরকারকে ঠিক করে দেওয়া উচিত কোন খাতে এলপি গ্যাস ব্যবহার হবে কোন খাতে হবে না।  

একই সঙ্গে এলপি গ্যাসের ব্যবহারে ব্যাপক সচেতনতা বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।

এমএম জসিম উদ্দিন বলেন, এলপি গ্যাস আমদানির ক্ষেত্রে নীতিমালার পরিবর্তন না আনলে অটো গ্যাসের কথা চিন্তা করে লাভ নেই। একই সঙ্গে বিদ্যমান বিস্ফোরক দ্রব্য আইন-১৯৮০ এর পরিবর্তন করে যুগোপযোগী করা উচিত।
 
তিনি বলেন, ভেজাল এলপি গ্যাসের ব্যবহার রোধে সরকারি কঠোর মনিটরিং নেই। প্রতি মাসে লাখ লাখ সিলিন্ডার বাসাবাড়িতে ঢুকছে অথচ এগুলো কতটুক নিরাপদ সেটা পরীক্ষা করবে কে? এর যে কোনো একটি সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হলে যারা সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছে তাদের ঘাড়ে দায় পড়বে। এই সেক্টরটাই হুমকিতে পড়বে।
 
তিনি বলেন, বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রক অধিদফতর থেকে একটা কমিটি গঠন করে দেওয়া উচিত। সিলিন্ডার আমদানির আগে সেটা ভারত থেকেই আসুক আর থাইল্যান্ড থেকেই আসুক এর মান পরীক্ষা করেই জাহাজে উঠানো প্রয়োজন। তা নাহলে একটা সিলিন্ডার দেশে ঢুকে পরলে সেটা ২৫ বছরেও আর যাবে না। এজন্য ফিল্ডেই পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট দিতে হবে।
  
গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারহান নূর, ওরিয়ন গ্যাস লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী অনুপ কুমার সেন, লান্টাবুর গ্রুপের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার প্রকৌশলী আব্দুস সালাম, বিএম এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও মোহাম্মদ নূরুল আলম, লাফস গ্যাস বাংলাদেশের ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সাঈদুল ইসলাম, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট এম আকিদুল আকিদুল ইসলাম, যমুনা গ্যাসের পরিচালক ইয়াছিন আরাফাত, ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের হেড অব সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং কাজী আশিক উর রহমান, টোটাল গ্যাস বাংলাদেশের হেড অব মার্কেটিং মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৭
এসএম/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।