ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

সোনালী ব্যাংক ইউকে’র দুই কর্মকর্তা বরখাস্ত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৭
সোনালী ব্যাংক ইউকে’র দুই কর্মকর্তা বরখাস্ত

ঢাকা: অনিয়মের অভিযোগে সোনালী ব্যাংক ইউকে লিমিটেডের দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কারণ দর্শানো নোটিশও দেওয়া হয়েছে ছয়জনকে।

অর্থ আত্মসাৎ, অর্থপাচার, অনুমোদন ছাড়া জনবল নিয়োগ দেওয়াসহ বিভিন্ন ধরণের অনিয়মে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় সম্প্রতি যুক্তরাজ্য শাখার কর্মকর্তা ইকবাল চৌধরী ও স্টিফেন কিংসকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
 
সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বাংলানিউজকে এতথ্য জানান।

 
 
দেশী গ্রাহকের ঋণপত্রের নিশ্চয়তা  ও প্রবাসীদের সেবা দিতে ২০০১ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করে সোনালী ব্যাংক ইউকে লিমিটেড। এতে সোনালী ব্যাংকের শেয়ার ৪৯ শতাংশ ও সরকারের ৫১ শতাংশ।
 
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, এই অনিয়মের সূত্রপাত কয়েক বছর আগেই হয়েছে। বেশ কিছু অনিয়মের ঘটনা প্রাথমিক ভাবে পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে সতর্কও করেছিলো। পরে জরিমানাও করা হয়েছে। আমলে না নেওয়ার ফলে অনিয়মের মাত্রা আরো বাড়তে থাকে।
 
পরবর্তীতে আমাদের তদন্তেও এই অনিয়ম দুর্নীতি ধরা পড়লে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
 
এমডি আরো বলেন, অনিয়ম দুনীতি রোধে প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে সোনালী ব্যাংকের যুক্তরাজ্য র্কাযালয়কে। এতোদিন নানা অনিয়মের কারণে মুনাফা হয়নি। আমরা সংস্কারমূলক কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। এজন্য অতিরিক্ত কিছু অর্থ খরচ করতে হয়েছে। তবে আমরা আশাবাদী যুক্তরাজ্য শাখা ঘুরে দাঁড়াবে, লাভবান হবে।
 
এর আগে সোনালী ব্যাংক ইউকে লিমিটেড পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই প্রতিবেদনে উঠেছে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতাসহ ৪শ ৫ ধরণের অনিয়ম।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্র্যাডফোর্ড শাখা থেকে চিটাগাং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আর হোসেন ব্যাংকের রেসট্রিকটেড এলাকায় প্রবেশ করেন। গোপন নথি ধ্বংস করেন। এর সঙ্গে কর্মকর্তাদের যোগসাজোশ ছিল।
 
সোনালী ব্যাংক ইউকে’তে টেলার পদে দুই জনকে নিয়োগ দেওয়া হলেও তারা কাজ করেন ফরেন ট্রেড ডিভিশনে। কিন্তু তাদের নিয়োগের কোনো কাগজপত্র নেই। লোকবলের প্রশিক্ষণের নামে দেখানো হয়েছে যাচ্ছেতাই ব্যয়। কেবল ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পেছনেই ব্যয় হয়েছে প্রশিক্ষণের ৫২ শতাংশ। আর ডেপুটি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নামে পদ সৃষ্টি করা হয়েছে সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ছাড়াই।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে বলা হয়েছে, বার্মিংহাম শাখা থেকে বাংলাদেশের ব্যাংক এশিয়ার শান্তিনগর শাখায় ২৪ হাজার ৩৯৪ ডলার পাঠানো হয় আউটসোর্স এক্সপোর্ট লিমিটেডের পক্ষ থেকে। কাগজপত্রের কোনো ধরণের যাচাই বাছাই ছাড়াই সেখান থেকে মিসেস সুনুকা বেগমের স্বাক্ষর জাল করে তোলা হয়েছে ৫ হাজার ডলার।
 
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন লঙ্ঘনের দায়ে ব্যাংকটিকে ৩ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করে যুক্তরাজ্যের ফাইন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথোরিটি- এফসিএ।  
 
পরবর্তীতে সোনালী ব্যাংক ইউকের কার্যক্রম নিয়ে নড়েচড়ে বসে সোনালী ব্যাংক। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে বরখাস্ত, ছয়জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া ছাড়াও নজরদারিতে রয়েছেন আরও কয়েকজন।
 
এমডি বলেন, দেড়যুগ আগে প্রতিষ্ঠা হলেও এখন পর্যন্ত মুনাফার মুখ দেখতে পারেনি এই শাখা। প্রতিববছর হিসাবের খাতায় যোগ হয়েছে লোকসান। আইন না মানায় গুনতে হয়েছে জরিমানাও। এখন সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর: ২৫, ২০১৭/আপডেট ১৮৩৬
এসই/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।