ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রথমবারের মতো কংক্রিটের সড়ক হচ্ছে সিলেটে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১৭
প্রথমবারের মতো কংক্রিটের সড়ক হচ্ছে সিলেটে প্রতিকী ছবি

ঢাকা: হাল্কা বৃষ্টির পানিতেই সড়কের উপরিভাগের বিটুমিন উঠে লাল ইটের বড় বড় টুকরো বেরিয়ে আসে। এতে কোথাও কোথাও যানবাহন চলাচলই অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে বছর বছর সড়ক মেরামত ব্যয় বেড়েই চলে।

 

এই দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে সিলেটে প্রথমবারের সম্পূর্ণ কংক্রিটে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি সড়ক। সিলেটের জৈন্তা থেকে জাফলং পর্যন্ত ১৬ দশমিক ০৯ কিলোমিটার সড়কটিকে কংক্রিট ব্লকে নির্মাণ করা হবে।

সিলেট তামাবিল ল্যান্ডপোর্ট কানেকটিং ও বল্লাঘাট সংযোগ সড়ক এটি। পাহাড়ি এই সড়ক দিয়ে ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণে পাথর ও কয়লা আমদানি করা হয়। এই সড়ক দিয়ে বিপুল সংখ্যক ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে প্রতি বছরই নষ্ট হচ্ছে সড়কের বিটুমিন। ফলে স্থায়ী সমাধান দিতে এই সড়ককে কংক্রিট দিয়ে বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ।  এর আগে খণ্ড খণ্ডভাবে অন্যান্য সড়কের বাজার অংশে কংক্রিট বসলেও এই প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণভাবে একটি সড়ক এর আওতায় আসছে।

সূত্র জানায়, ঢাকা-সিলেট-তামাবিল-জাফলং মহাসড়ক একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। আঞ্চলিক যোগাযোগের দৃষ্টি কোণ থেকেও এটা গুরুত্বপূর্ণ। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সিলেটের জ্বালানি খাত, নির্মাণ সামগ্রী এবং পর্যটন খাতে অবদান রাখতে সড়কটি আরও উন্নত করা দরকার। তামাবিল দেশের অন্যতম স্থলবন্দর।  

সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ( ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড  ডিসিপ্লিন সেকশন)  জাহিদা খানম বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাজার অংশে কংক্রিটের ব্লক ব্যবহার করেছি। কারণ বাজার অংশে মানুষের আনাগোনা অধিক। সড়কের উপর অনেক সময় পানি জমে থাকে। তাই বিটুমিন (পিচ) নষ্ট হয়ে যায়। কংক্রিটের সড়কে আমরা ভালো সুফল পাচ্ছি। এই ধারাবাহিকতায় সিলেটের জৈন্তা থেকে জাফলং পর্যন্ত ১৬ দশমিক ০৯ কিলোমিটার সড়ক কংক্রিটের মাধ্যমে নির্মাণ করবো। সড়কটিতে যানবাহন চাপও অনেক।  পাথরবাহী বড় বড় ট্রাক এই সড়কে চলাচল করে। তাই পুরো সড়কটিই কংক্রিটের মাধ্যমে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা আশা করছি ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বাজার অংশেও কংক্রিটের ব্লক ব্যবহার করবো। এটা(কংক্রিট সড়ক) অনেক ব্যয়বহুল হলেও, একবার হয়ে গেলে অনেক দিন টেকসই হবে। ’

দেশের নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত পাথরের মোট চাহিদার শতকরা ৫০ ভাগ আমদানি হয় এই সড়ক দিয়ে।

এছাড়া এই পথ দিয়ে হাজার হাজার পর্যটক জাফলং ভ্রমণ করতে আসেন। ২০১৫ সালে তামাবিল-ডাউকি সীমান্ত দিয়ে ঢাকা-গৌহাটি বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় সড়কের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।  

সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, এ সড়কটিকে কংক্রিটে নির্মাণ করতে খরচ হবে ২৫২ কোটি টাকা।

প্রকল্পের আওতায় ফোরলেনের এই সড়কটিতে ১৩ মিটার দৈর্ঘের চারটি কালভার্ট, দুই কিলোমিটার এল টাইপ সসার ড্রেন, ১৫ কিলোমিটার ভি টাইপ সসার ড্রেন নির্মাণ করা হবে।   সাড়ে চার কিলোমিটার কাভার স্ল্যাবসহ ইউ-ড্রেন, ১৫০ মিটার পিটসহ আরসিসি ড্রেনসহ দুই টি ইন্টারসেকশন উন্নয়ন করা হবে। ৫০টি পোস্ট ট্রাফিক সাইন, চারটি দিক নির্দেশ সাইন, ছয়টি কংক্রিটের পোস্টসহ সড়ক জুড়ে থাকবে নান্দনিক রোড মার্কিং।

এছাড়া সড়ক বাঁধ প্রশস্তকরণ, আনলোড স্ট্যাক ইয়ার্ড ও এক্সেল রোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।   

চলতি মেয়াদ থেকে জুন ২০১৯ সালের মধেই সড়কটি নির্মাণ করতে চায় সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৭
এমআইএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।