ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বন্দর পরিচালনা বোর্ডে সংসদীয় কমিটিকে যুক্ত করার সুপারিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১১

ঢাকা: বন্দর পরিচালনা বোর্ডে সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবদের অন্তর্ভূক্ত করার সুপারিশ করেছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

সুপারিশ অনুযায়ী বন্দর পরিচালনা বোর্ডে স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ আরও কিছু মন্ত্রণালয়ের সচিবদের অন্তর্ভূক্ত করতে বলা হয়েছে।


 
বুধবার সংসদ ভবনে কমিটির ২৭তম বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়েছে।

বৈঠকের পর কমিটির সভাপতি নূর-ই-আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন।

লিটন চৌধুরী বলেন, ‘বন্দর পরিচালনা বোর্ডেকে আরও গতিশীল করতেই এই সুপারিশ করা হয়েছে। বর্তমানে বন্দর সংশ্লিষ্টরাই এই বোর্ডের সদস্য। এখানে সংসদীয় কমিটির সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবদেরও যুক্ত করার জন্য বলা হয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় দিয়ে বন্দর পরিচালনার কাজ করা কঠিন। এখানে নিরাপত্তা, বাণিজ্যসহ অন্যান্য বিষয়ও যুক্ত। এই কারণেই কাজের গতিশীলতা আনতে এই সুপারিশ করা হয়েছে। ’

সিঙ্গাপুরের বন্দর পরিচালনার মডেল সামনে রেখে এই সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের বন্দর পরিচালনা বোর্ড অনেক শক্তিশালী। এজন্য আমরা এই মডেল সামনে রেখেছি। ’

এদিকে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের এডভাইজারি কমিটির সুপারিশ সংসদীয় কমিটিকে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই কমিটি এই পরামর্শ দিয়েছে বলে সূত্র জানায়।

বৈঠকে ২০০৯ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের ড্রেজারের সঙ্গে এম.ভি.সি ইউটোপিয়া জাহাজের সঙ্গে দুর্ঘটনার অধিকতর তদন্তে র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের একটি সংসদীয় উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য ২০০৯ এর অক্টোবর মাসে চট্টগ্রাম বন্দরের আউটার বারে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) ড্রেজার এমভি খনক ড্রেজিং করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। বন্দরে প্রবেশের সময় এম.ভি.সি ইউটোপিয়া নোঙর করা ডেজ্রারকে ধাক্কা দেয়।

ওই ঘটনায় মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। মন্ত্রণালয়ের ওই তদন্ত প্রতিবেদন বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। এই তদন্ত প্রতিবেদনে পর্যাপ্ত আইনী ব্যাখ্যা ও সুনির্দিষ্ট সুপারিশ নেই বলে সংসদীয় কমিটি মত প্রকাশ করেছে।

আগামী ১ মাসের মধ্যে এই উপ-কমিটিকে আরও তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের তদন্তে আইনি বিষয়গুলো অস্পষ্ট। যেহেতু বিদেশি একটি জাহাজের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে, সে কারণে এর আইনী দিকগুলো প্রয়োজনীয়। আমাদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ারও একটি বিষয় আছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘এই দুর্ঘটনায় বিদেশি ওই জাহাজই দায়ী। ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্যও আইনী দিকগুলো জরুরি। ’

বৈঠকে জানানো হয়, নির্মাণ কাজের বিলম্বের জন্য প্রস্তাবিত পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনাল আগামী বছরের ডিসেম্বরের আগে কাজ শুরু করতে পারবে না।

বৈঠকের পর নৌ পরিবহন মন্ত্রী মো. শাহাজান খান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঠিকাদাররা দ্রুত কাজ করছে না বলেই এই টার্মিনালের কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে। ’

কমিটির সভাপতি এই বিষয়ে জানান, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ফিনানশিয়াল অফারের কাজ শেষ হবে। এর পর ১ বছরের মধ্যে এই টার্মিনালের কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

লিটন চৌধুরী বলেন, ‘এই টার্মিনাল কাজ শুরু করলে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমবে। ’

নূর-ই-আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী মো. শাজাহন খান, মো. মজাহারুল হক প্রধান, গোলাম কিবরিয়া টিপু, হাবিবুন নাহার, সামশুল হক চৌধুরী, র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও নসরুল হামিদ অংশ নেন।

এছাড়া নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল মান্নান হাওলাদার, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর এম আনোয়ারুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।