ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ডিসিসির বাজেট ঘোষণা

আহমেদ রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৭ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১১
ডিসিসির বাজেট ঘোষণা

ঢাকা: রাজধানীর উন্নয়নে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) মঙ্গলবার দুপুরে ২০১১-১২ অর্থ বছরের জন্য ২ হাজার ৭১৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে।

মেয়র সাদেক হোসেন খোকা মহানগর নাট্যমঞ্চে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিক, কাউন্সিলর ও ডিসিসি কর্মকর্তাদের সামনে এ বাজেট ঘোষণা করেন।



বাজেটে নিজস্ব উৎস থেকে ৮ শ’ ৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই আয়ের মধ্যে রয়েছে- রেডস অ্যান্ড ট্যাক্স বাবদ বকেয়াসহ ৪২০ কোটি, সালামি ও বাড়িভাড়া বাবদ ১০৩ কোটি, ট্রেড লাইসেন্স ফি থেকে ৫০ কোটি, রিক্সা লাইসেন্স থেকে ৩ কোটি, বিজ্ঞাপন ফি বাবদ ১৫ কোটি, বাস ও ট্রাক টার্মিনাল থেকে ১৫ কোটি, গরুর হাট ইজারা বাবদ ১৬ কোটি, রাস্তা খনন ফি বাবদ ৪০ কোটি, যন্ত্রপাতি ভাড়া বাবদ ১০ কোটি, সম্পত্তি হস্তান্তর খাতে ১৪০ কোটি, অকট্রয় ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ কোটি ৫০ লাখ, শিশুপার্ক থেকে ৪ কোটি, বিদ্যুৎ বিল আদায় খাত থেকে ১২ কোটি এবং অন্যান্য আয় খাত থেকে ৮ কোটি টাকা।

সরকারি উন্নয়ন অনুদান হিসেবে ২০০ কোটি, বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বভিত্তিক প্রকল্প থেকে ১৫ শ’ ৯০ কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়ার আশা করছে ডিসিসি।

এ বাজেটে নগরীর উন্নয়ন খাতে ২২ শ’ ৪০ কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বাজেটে ব্যয়ের খাত- কমকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খাতে বার্ষিক ব্যয় রাখা হয়েছে ৪০২ কোটি টাকা। নগরীর সড়ক রস্তাঘাট ট্রাফিক অবকাঠামো সংরক্ষণ বাবদ ৩১০ কোটি, কবরস্থান ও শ্মশানঘাট উন্নয়নে ৬ কোটি ৫০ লাখ, শাহবাগ শিশু পার্কের রাইড আধুনিকায়ন ও মেরামতের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩ কোটি টাকা।

অন্যান্য পার্ক ও খেলার মাঠ উন্নয়নে ৭ কোটি। আঞ্চলিক কার্যালয় ও বাজার নির্মাণে ২১ কোটি। সুইপার কলোনি নির্মাণে ২০ কোটি, কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণে ১৫ কোটি, শরীর চর্চাকেন্দ্র, কাউন্সিলর অফিস ও লাইব্রেরি নির্মাণে ২ কোটি ২০ লাখ, কাজী বশির মিলনায়তন উন্নয়নে ৭ কোটি, অফিসার্স ও স্টাফ কোয়াটার নির্মাণে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬ কোটি টাকা।

কার পার্কিং খাতে ৪ কোটি ৫০ লাখ, পরিবেশ উন্নয়ন খাতে ৭ কোটি ৫০ লাখ, ল্যান্ডফিল রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে ৩ কোটি এবং মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম উন্নয়ন ও যন্ত্রপাতি ক্রয় বাবদ ১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এর আগে টেলিফোনে মেয়র খোকা বাংলানিজউজকে বলেন, ‘এবারের বাজেটে অনেকগুলো নতুন প্রকল্প থাকছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে নগরবাসী এক নতুন ঢাকা দেখতে পাবে। ’

তিনি বলেন, ‘গত অর্থ বছর আমরা যেসব প্রকল্প হাতে নিয়েছিলাম, সে সবের অধিকাংশই  সম্পন্ন করতে পেরেছি। ’

বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে নিজস্ব আয় থেকে ৮৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা যোগান দেওয়া হবে।

অবশিষ্ট ১ হাজার ৮৫৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা সরকারি, পিপিপি ও বৈদেশিক অনুদান থেকে পাওয়া যাবে বলে আশা করছে ডিসিসি।

২০১০-১১ অর্থ বছরে ডিসিসির মূল বাজেট ছিল ২ হাজার ১৭১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। পরে তা সংশোধন করে ১ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা করা হয়।

আনুষ্ঠানিক ভাবে বাজেট ঘোষণার আগে কাউন্সিলরদের সভায় এটি অনুমোদন করা হয়। সে সভার সভাপতিত্ব করেন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা।

বাজেটে নগরীতে সরকারি অর্থায়নে তিনটি নতুন কাঁচাবাজার নির্মাণের জন্য ৩৩১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ খাতে ডিসিসির নিজস্ব অর্থ বরাদ্দ থাকছে ১০০ কোটি টাকা।

এছাড়া বেড়ি বাঁধ থেকে মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। নগরীর রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কারে সরকারি অর্থায়ন ১০০ কোটি ও  নিজস্ব ২০ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বাজেটে ধানমণ্ডি লেক উন্নয়ন ও সংস্কারে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ কোটি টাকা।

অন্যদিকে একই প্রকল্পে সরকারি অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

নগরীর রাস্তা আলোকিত করতে সোডিয়াম লাইট ও সোলার প্যানেল স্থাপনে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

মিরপুর গ্রামীণ ব্যাংক থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সড়ক নির্মাণে ৮৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। চলতি অর্থ বছরেও এ প্রকল্পে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

আমিনবাজার ল্যান্ডফিল প্রকল্পের উন্নয়নে ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা, তেজগাঁও আড়ং ও গুলশান স্যুটিংক্লাবের মাঝে লিংকব্রিজ নির্মাণে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকার রাস্তাঘাট-নর্দমা উন্নয়নে সরকারি অর্থায়ন ৪৫ কোটি এবং নিজস্ব তহবিল থেকে ৩১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য ১৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা, নগরীর অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে ৮০ কোটি টাকা, মিরপুর সেনানিবাস বাইপাস সড়ক নির্মাণ, সিরামিক রোড উন্নয়ন এবং দক্ষিন পল্লবী এলাকার নর্দমা উন্নয়নে ৪০ কোটি টাকা এবং নগরীর ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট উন্নয়নে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ডিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ,  প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হোসেন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান এবং প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা বিপন কুমার সাহা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad