ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

হরতালের মতো কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার আহ্বান একে আজাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১১

ঢাকা: হরতালের মতো আত্মঘাতী কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের বৃহৎ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ।

পাশাপাশি সরকার এবং বিরোধীদলীয় সব রাজনৈতিক দলগুলোকে হরতালের বিকল্প পথ খুঁজে বের করারও আহবান জানান তিনি।



একইসঙ্গে টিসিবিকে আরও শক্তিশালী করার কথা বলে তিনি বলেন, টিসিবির কর্মকর্তারা এখানে আসেন অবসরের শেষ সময়। এখানে এসেই তারা নিজের আখের গোঁছানোর চেষ্টা করতে থাকে। তাই টিসিবি সক্রিয় হচ্ছে না।
পাশাপাশি কোনো অজুহাতে দ্রব্যমূল্য যেনো না বাড়ে তার জন্য ব্যবসায়ীদের সর্তক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

সরকারের প্রতি তিনি বলেন, হয় টিসিবিকে শক্তিশালী করুন, না হয় টিসিবিতে যে ২ হাজার ৫শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা ব্যবসায়ীদের মাঝে বিতরণ করুন। দেখেন দ্রব্যমূল্য সহনীয় হয় কি না।

রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা এবং পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এলাকাভিত্তিক ও বিশেষায়িত ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সোমবার বিকেলে ৫ টায় ডিসিসিআই সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা শুরু হয়।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্বে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম।

বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি ব্যবসায়ীদেরকে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিবেচনা করতে হবে। তিনি আগামী রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান।

তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে রজমান মাসে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা চালু রাখা হবে। তুলে দেওয়া হবে পিএসআই ব্যবস্থাও ।

আসিফ ইব্রাহিম তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, হরতালের কারণে রমজানে দ্রব্যমূল্য বাড়লে এর দায় দায়িত্ব ব্যবসায়ীরা নেবে না। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকেই হরতালের বিকল্প খুঁজে বের করার কথা বলেন তিনি।

আসিফ ইব্রাহিম বলেন, ‘পণ্যের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে নীতিমালার অভাব থাকাসহ ১২টি কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে।
এসব কারণ ছাড়াও প্রতি বছর রমজানের শুরুতেই কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন কৌশলের কারণেও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়।

এসব কারণ থেকে উত্তরণের জন্য ৯টি সুপারিশ করেছে ডিসিসিআই। সুপারিশগুলো হচ্ছে- মধ্যস¦ত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ব কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের মজুদ এবং সরবরাহ নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা এবং এ ব্যাপারে ক্রমাগত সার্কুলার জারির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকলকে আশ্বস্ত করা যাতে Demand এবং Supply Gap এর কারণে মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে এ রকম ধারণা মানুষের মধ্য না জন্মায় তার ব্যবস্থা নেওয়া।

উপজেলা পর্যায়ে গ্রোথ সেন্টারগুলোকে কার্যকরী ভাবে কৃষিপণ্য মজুদ রাখা এবং তাদের সাথে শহর পর্যায়ে বড় বড় বাজারগুলোর নেটওয়ার্ক স্থাপন যাতে ক্রমাগতভাবে অযৌক্তিক মধ্যসত্তভোগীদের দৌরাত্ত্ব হ্রাস পায়।

টিসিবির কার্যক্রমের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং স্বচ্ছতা আনয়ন এবং টিসিবিকে যে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তৈরি করা হয়েছিল তার যথার্থতা প্রমাণ। প্রয়োজনে Public Procurement Act, 2006 এর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনয়নের ব্যবস্থা। এছাড়া জেলা পর্যায়ে Consumer Protection Act এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন।

কতগুলো অধিক গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের ক্ষেত্রের Supply-Chain বিশ্লেষণ করে কোন পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধির কৌশল বাস্তবায়িত হয় এবং তা পরিহার করার জন্য কি ধরনের নীতিমালা নির্ধারণ করা যায় তার ব্যবস্থা করা।

দ্রব্যমূল্য নিরসনে মিডিয়ার ভূমিকাকে আরও জোরদার করে সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য প্রচারে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২১৫ ঘন্টা ১১ জুলাই ১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।