ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

উগান্ডায় কৃষিখাতে বিনিয়োগে সরকারের সহায়তা চায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৮ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১১
উগান্ডায় কৃষিখাতে বিনিয়োগে সরকারের সহায়তা চায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা

ঢাকা: দেশের ঘাটতি মিটিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আফ্রিকার উগান্ডায় ধান চাষে বিনিয়োগ করতে চায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। এ জন্য তারা বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেছেন।



সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ-আফ্রিকা বিজনেস অর্গানাইজেশন  (বিএবিও) ব্যবসায়ী সংগঠনের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উগান্ডায় কৃষিখাতে বিনিয়োগে আগ্রহী ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের সহায়তা কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি ও দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ।

তিনি বলেন, আফ্রিকায় ধান ও গমের উৎপাদন খরচ তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। সেখানে প্রতি কেজি ধান উৎপাদনে খরচ হবে ১২ থেকে ১৪ টাকা। আর গমের প্রতি কেজিতে খরচ পরবে ১০ টাকা। উৎপাদিত ধানের ২০ শতাংশ পাবে উগান্ডা সরকার। আর বাকি ৮০ শতাংশ পাবে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, কৃষিকাজে যেসব শ্রমিক নিয়োগ করা হবে তার ১০ শতাংশ বাংলাদেশ থেকে নেওয়া হবে। বাকি ৯০ শতাংশ শ্রমিক থাকবে উগান্ডার নাগরিক। উৎপাদন ব্যয় বাদে ১০ শতাংশ লাভ ধরে উৎপাদিত ফসল বাংলাদেশ সরকারকে দেওয়া হবে। সরকার ওই ধান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করে খাদ্য নিরাপত্তা বাড়াতে পারবে। পরবর্তীতে উগান্ডা কিংবা অন্য কোন দেশে কৃষিখাতে বিনিয়োগ করতে পারলে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ন হয়ে উঠবে।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে আমরা ব্যবসায়ীরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে উগান্ডায় কৃষিকাজে বিনিয়োগ করতে চাই। ব্যবসায়িক স্বার্থের চেয়ে দেশের খাদ্য ঘাটতি মেটানোই আমাদের মূল লক্ষ্য।   কিন্তু বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বিদেশে কৃষিখাতে বিনিয়োগের অনুমতি না থাকায় এটা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমরা আশা করছি সরকার খুব শিগগিরই আফ্রিকায় বিনিয়োগের প্রয়োজনীয় অনুমতি দেবে সরকার। ’

তিনি বলেন, ‘আফ্রিকার দেশ উগান্ডার সরকার এ ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার অনুমতি না দিলে এ প্রকল্প সফল হবে না। ’

লিখিত বক্তব্যে মাতলুব আহমাদ আরো বলেন, বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের রয়েছে তিক্ত অভিঞ্জতা। সরকার আন্তরিক থাকার পরও সময় মতো চাল আমদানি হয় না। তাই আমাদের নিজেদেরকেই উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে।

মাতলুব আহমাদ বলেন, অনুসন্ধানে আমরা দেখেছি, আফ্রিকায় কৃষি খাতে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। যে সুযোগটি পৃথিবীর অনেক দেশ ব্যবহার করছে। উগান্ডার সরকার সেদেশে কৃষিখাতে বিনিয়োগের জন্য সাদর সম্ভাষণ জানিয়েছে। তাই আমরা এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহ-সভাপতি আবুল কাশেম আহমেদ, সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য মাহবুব ইসলাম রুনু, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক সাফকাত হায়দার ও ঢাকায় নিযুক্ত উগান্ডার অনারারি কনসাল জেনারেল আবুল হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে উগান্ডায় ধান চাষে করছে এমন একজন মাহমুদ হাসান বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, আমরা চার বন্ধু সেখানে ১২০ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চাষ করছি। কিন্তু সেখানে কৃষিকাজে বিনিয়োগে বাংলাদেশ সরকারের স্বীকৃতি নেই। তাই উৎপাদিত ধান বাংলাদেশে দিতে পারছিনা।

তিনি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের উগান্ডায় বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।    

উগান্ডার কনসাল জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, উগান্ডায় বিনিয়োগ অনেক দেশের চেয়ে নিরাপদ। সেখানে কোন রাজনৈতিক সহিংসতা নেই। দুর্নীতিও কম। ফলে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করলে রিটার্ন পাবেন। উগান্ডার সরকার এব্যাপারে সব ধরনের সহায়তা দিতে আগ্রহী বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad