ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ডিএসই’তে বিপর্যয়: নিমেষে উধাও ৬ হাজার ৫শ কোটি টাকা !

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১০
ডিএসই’তে বিপর্যয়:  নিমেষে উধাও ৬ হাজার ৫শ কোটি টাকা !

ঢাকা: সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের ঋণ-সুবিধার সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করার প্রথম দিনেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে নেমে এসেছে বিপর্যয়। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার  ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের ব্যাপক দরপতন হয়েছে।

আর এক ধাক্কায় বাজার মূলধন আগের দিনের চেয়ে ৬ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা কমেছে।  

১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারের সর্বগ্রাসী বিপর্যয়ের পর একদিনে এত বড় দরপতনের ঘটনা আর ঘটেনি। তবে ডিএসই’র সভাপতি মো. শাকিল রিজভী অবশ্য বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য্য ধরার আহবান জানিয়ে বলেছেন, ‘শিগগিরই বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তাই বিনিয়োগকারীদের কোনোভাবেই আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করা ঠিক হবে না। ’
 
বাজারে রোববারের এই মহা দরপতনের জন্য ুদ্র বিনিয়োগকারীদের অনেকেই দায়ী করেছেন এসইসির কর্মকর্তাদের। এদেরই একজন রাজধানীর মিরপুরের ুদ্র বিনিয়োগকারী আবদুল করিম চৌধুরী। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এসইসির কর্মকর্তারা নিজেদের আখের গোছানোরা জন্য ক’দিন পরপরই বাজার অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করেন।   তারা পরিকল্পিতভাবে বাজারে দরপতন ঘটিয়ে জুয়ারিদের কম দামে শেয়ার কেনার সুয়োগ করে দিচ্ছেন। পরে আবার নির্দেশনা তুলে নিয়ে বাজারকে ঊর্ধমুখী করেন। আজ বাজারে যা ঘটলো সেটা তারই প্রমাণ। ’ তিনি আরো বলেন, ‘এসইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে জুয়ারিদের আঁতাত রয়েছে। এসইসির কারসাজির কারণেই বিনিয়োগকারীরা নি:স্ব হয়ে যাচ্ছেন। ’

এদিন ডিএসইতে সাধারণ মুল্য সূচক আগের দিনের চেয়ে ২০৪ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২০০ দশমিক ২২ পয়েন্টে নেমে আসে। এটি পুঁজিবাজারের ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ দরপতন। এর আগে গত চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ডিএসইতে সাধারণ সূচক সর্বোচ্চ ১৩৭ পয়েন্ট কমেছিল।
   
রোববার ডিএসইতে ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, আইটি, সেবা এবং সিরামিকস খাতের শেয়ারে ধ্বস নামে।

তবে প্রায় সব খাতের শেয়ারের দরপতন হলেও একমাত্র মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত। এ খাতের প্রায় সব ইউনিটের দাম  বেড়েছে।  

রোববার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৪৪টি কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে ১৯১টির, বেড়েছে মাত্র ৫১ টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২টির শেয়ারের দাম। এদিন অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হওয়ায় বাজার মূলধন আগের দিনের চেয়ে ৬ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা কমেছে। বাজার মূলধন ও সূচক কমার পাশাপাশি আর্থিক লেনদেন কমেছে।

এদিন ডিএসইতে ১ হাজার ৪৪৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার  লেনদেন হয়। যা আগের দিনের চেয়ে ৩৩৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা কম।

রোববার লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হচ্ছে - তিতাস গ্যাস, এবি ব্যাংক লিঃ, লঙ্কাবাংলা ফিন্যান্স, বিএসআরএম স্টিল, বেক্সিমকো লিঃ, আরএকে সিরামিকস্, ডেসকো লিঃ, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, সামিট পাওয়ার  ও ওয়ান ব্যাংক লিঃ।

অন্যদিকে, দর বাড়ার ক্ষেত্রে প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো -  প্রাইম ব্যাংক, ১ম আইসিবি এএমসিএল মিউচুয়াল ফান্ড, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, ঢাকা ডাইয়িং, এটলাস বাংলা, আইসিবি এএমসিএল ২য় মিউচুয়াল ফান্ড, জেমিনী সী ফুড, আইসিবি এমপ্লয়ীজ প্রভিডেন্ট ১ম মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম-১, আইসিবি ৩য় এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, আইসিবি ২য় এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড ও ৭ম আইসিবি মিউচুয়াল ফান্ড।

দাম কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো - আইএফআইসি, কাশেম সিল্ক, বিএসআরএম স্টীল, পূবালী ব্যাংক, সমতা লেদার, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, এবি ব্যাংক, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, ন্যাশনাল ব্যাংক লিঃ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিঃ।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়ঃ ১৭২৫ ঘন্টা, ২৫ জুলাই ২০১০






বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad