ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভারত-বাংলাদেশ নৌ ট্রানজিট চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বৈঠক শনিবার শুরু

আনোয়ারুল করিম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১১
ভারত-বাংলাদেশ নৌ ট্রানজিট চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বৈঠক শনিবার শুরু

ঢাকা: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নৌপথে ট্রানজিট হিসেবে পরিচিত ‘ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড (আইডব্লিউটিটি)’ চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে শনিবার ভারতের গোয়ায় বৈঠকে বসছে প্রতিবেশী দু’দেশ।

গোয়ার দুই দিনের ওই বৈঠকে অংশ নিতে বাংলাদেশের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মান্নান হাওলাদার শুক্রবার ঢাকা ছেড়েছেন।



বাংলাদেশের নয় সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন তিনি।

শুক্রবার ঢাকা ত্যাগের আগে আব্দুল মান্নান হাওলাদার বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানান।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নৌপথের ট্রানজিটের চুক্তির মেয়াদ আগামী ৩১ মার্চ শেষ হচ্ছে। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২৪ মার্চ এ চুক্তিটি ২ বছরের জন্য নবায়ন করা হয়। ওই বছরের ১ এপ্রিল থেকে চুক্তিটি পরবর্তী দুই বছরের জন্য কার্যকর হয়।

নৌপথের ট্রানজিটের এ চুক্তির আওতায় ভারতের জলযান মালামাল নিয়ে বাংলাদেশের ভেতর প্রবেশ করে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে ১৯৭২ সালে প্রথমবারের মতো এ প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। পাকিস্তান আমলেও ভারত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ভেতর দিয়ে নৌ ট্রানজিট পেত; তবে ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর তা বন্ধ হয়ে যায়।

নৌপরিবহন সচিব আব্দুল মান্নান হাওলাদার জানান, প্রটোকলের আওতায় সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথগুলো ব্যবহারের কথা থাকলেও ভারতীয় জলযানগুলো দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জলসীমান্ত শেখবাড়িয়া দিয়ে প্রবেশ করে চাঁদপুর ও আশুগঞ্জ হয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ ও ব্রাহ্মনবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত ব্যবহার করে।

নৌপরিবহন সচিব বলেন, ‘আইডব্লিউটিটি প্রটোকলের মেয়াদ বাড়ানুর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘এবারের বৈঠকে আশুগঞ্জ বন্দরের মাধ্যমে কনটেইনার পরিবহনের ব্যাপারে আলোচনা হবে। ’

নৌপরিবহন সচিব জানান, আশুগঞ্জে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। ২০১৩ সালের মধ্যে এ টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

তিনি বলেন, ‘প্রটোকলের আওতায় ভারত এ টার্মিনাল ব্যবহার করতে পারবে। তবে তা অবশ্যই মাশুলের বিনিময়ে তারা ব্যবহার করবে। কনটেইনার পরিবহনের মাশুলের হার নিয়েও গোয়ার বৈঠকে আলোচনা হবে।

সূত্র জানায়, আশুগঞ্জ টার্মিনাল নির্মাণের সময়ের মধ্য ভারত নারায়ণগঞ্জের খানপুরে সদ্য নির্মিত কনটেইনার টার্মিনাল ব্যবহারে আগ্রহী।

এ ব্যাপারে নৌপরিবহন সচিব বলেন, ‘ভারতীয় প্রতিষ্ঠান কনকরকে খানপুর টার্মিনালের পরিচালনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আপাতত নিয়োগের প্রস্তাব ভারত দিয়ে রেখেছে। দেখা যাক এটা নিয়ে কী আলোচনা হয়। ’

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আইডব্লিউটিটি চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে গত ২২ ডিসেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে চুক্তিটির মেয়াদ ১ বছর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও ভারতের প্রস্তাব ছিল এটির মেয়াদ ৭ বছর করা হোক।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অভ্যন্তরীণ জলপথে ট্রানজিট ও বাণিজ্য চুক্তির মেয়াদ ১ বছর করার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত ও পর্যবেক্ষণের কথা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তাদের নিজস্ব মতামত জানিয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের বেসরকারি জাহাজ-কার্গো মালিকদের সংগঠনের সঙ্গেও আলোচনা করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট বিধিমালা স্থগিত করায় নৌপথে ট্রানজিট বাংলাদেশের জন্য লাভজনক নাও হতে পারে। কারণ এতে ট্রানজিট মাশুল নেওয়া হবে না। তবে যে নৌরুট ভারত ব্যবহার করবে সেই নৌরুটের নাব্যতা রার জন্য তারা বছরে পাঁচ কোটি ইউএস ডলার খরচ করবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।