ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যাংকগুলোকে সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে বলেছেন বিবি গভর্নর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১০
ব্যাংকগুলোকে সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে বলেছেন বিবি গভর্নর

ঢাকা : শুল্কমুক্তির সুবিধা না দিলেও সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) খাতে ব্যাংকগুলোকে অধিক হারে বরাদ্দ বাড়াতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

তিনি বলেন, ‘শুল্কমুক্তির সুবিধা দিলেই আমরা সিএসআরে ব্যয় করবো আর না দিলে করবো না, এ ধরনের মানসিকতা ঠিক নয়।

ব্যাংকগুলো এই সমাজ থেকেই টাকা নিচ্ছে। এখান থেকেই তারা লাভবান হচ্ছে। তাহলে তারা কেন সমাজের জন্য ব্যয় করবে না। ’

একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। সে দায়িত্ব নিয়েই প্রত্যেককে এ কাজে এগিয়ে আসতে হবে। ’

বুধবার রাজধানীর হোটেল শেরাটনে এক অনুষ্ঠানে এবিবির চেয়ারম্যান কে মাহমুদ সাত্তার সামাজিক দায়বদ্ধতা কাজে ব্যয়কৃত টাকা করমুক্ত সুবিধার আওতায় রাখার দাবি জানালে গভর্নর এসব কথা বলেন।
 
ম্যানেজমেন্ট অব রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (এমআরডিআই) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক্যার্স বাংলাদেশ লিমিটেডের (এববিএল) যৌথ উদ্যোগে ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

জাতীয় ইংরেজী দৈনিক ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য আমিনুর রহমান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এসকে সুর চৌধুরী, এবিবিএলর চেয়ারম্যান কে মাহমুদ সাত্তারসহ বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও প্রতিনিধিরা।

এমআরডিআইর নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সিএসআর বিষয়ক প্রকল্প উপস্থাপন করেন।

কে মাহমুদ সাত্তার বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কাজে ব্যয়ের টাকা করমুক্ত সুবিধার আওতায় রাখা গেলে ‘ব্যাংকগুলো ১০০ টাকার স্থলে ১৪০ টাকা ব্যয় করতে পারবে। ’

এ সময় এনবিআরের প্রতিনিধি বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কাজে ব্যয় থেকে যে কর নেওয়া হয়, সরকার তা সামাজিক নিরাপত্তা খাতেই ব্যয় করে। এ টাকা নিয়ে বয়স্কভাতা, ভিজিএফসহ বিভিন্ন সমাজ উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। ’

এ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যাংকগুলোই বেশি সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করে। এজন্য তাদের যতদূর সম্ভব সুবিধা দিতে হবে। এছাড়া এ নিয়ে কোনো জটিলতা থাকলে তা দুর করা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

তিনি বলেন, ‘যে সব ব্যাংক বেশি বেশি সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করবে। ’

ব্যাংকগুলোকে অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা ছয়টি প্রকল্প ছাড়াও হাওড়, চর অঞ্চলসহ প্রত্যন্ত এলাকার ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার ক্ষেত্রে তিনি সহায়তার আহ্বান জানান।

সিএসআর কার্যক্রমের অর্থের ক্ষেত্রেও এনবিআরকে রাজস্ব দিতে হয় ব্যাংকের নির্বাহীদের এমন প্রশ্নের জবাবে এনবিআর সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, ‘২০০৯ সালে সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনাকারী ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এনবিআর একটা এসআরও জারি করে। নিয়ম মাফিক অর্থ থাকাসহ পাঁচটি শর্ত পূরণ করলে সিএসআর এ বরাদ্দ করা অর্থের বিপরীতে কোন কর দিতে হবে না।

তিনি বলেন, ‘সিএসআর বিষয়ে যে আইনি জটিলতা রয়েছে তা নিজ-নিজ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে নিরসন করা হবে। ’

এ সময় গভর্নর ব্যাংকগুলোকে শুল্কের টাকা ফেরত চেয়ে এনবিআরে চিঠি দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দেন।

এসকে সুর চৌধুরী বলেন, ‘সামাজিক কাজে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বরাদ্দের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিগত ও পদ্ধতিগত সব সুবিধা দেবে। এছাড়া উপযুক্ত নির্দেশনাও দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ’

ব্যাংকগুলোর সিএসআর এ বরাদ্দ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০০৮ সালে ব্যাংকগুলো সিএসআর এ বরাদ্দ করেছিল ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ ২০১০ এসে এ বরাদ্দকৃত অর্থ বেড়ে ৬০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ সময় : ০০৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।