ঢাকা: জাহাজে আমদানি-রপ্তানি মালামাল ওঠানামার জন্য ট্যারিফ বাড়ানোর নীতিমালা প্রণয়ন করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ১৯৮৬ সালে বন্দরে ৬০ ধরনের ট্যারিফ চালু হওয়ার পর ২০০৮ সালে সর্বশেষ ৫টি ট্যারিফ সংশোধন করা হয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বুধবার পরামর্শক নিয়োগের দরপত্র আহ্বান করেছে।
নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের বন্দর শাখার উপ-সচিব (সম্প্রতি যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত) নাসির আরিফ মাহমুদ গত সপ্তাহে বাংলানিউজকে বলেন, ‘ট্যারিফ বাড়ানোর আগে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। ’
‘১৯৮৬ সালে ৬০ ধরণের ট্যারিফ চালু করার দীর্ঘদিন পর গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালে ৫টি ট্যারিফ বাড়ানো হয়। ’
বিগত কয়েক বছর নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের বন্দর শাখায় দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে নাসির আরিফ মাহমুদ বলেন, ‘এ অঞ্চলের আশেপাশের কোনো বন্দরে এতো অল্প চার্জে মালামাল ওঠানামা করানো যায় না। ’
তিনি বলেন, ‘ অথচ প্রচলিত ট্যারিফ বাড়ানোর চেয়ে উল্টো কমানোর দাবি জানিয়েছে গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এমনকি ১৯৮৬ সালে ধার্য করা ট্যারিফ কমানোরও দাবি জানিয়েছে তারা । ’
৩০ ডিসেম্বর নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও ট্যারিফ বাড়ানো এবং নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়টি আলোচিত হয় বলে নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কয়েক বছর আগে ‘প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপার’ নামের একটি সংস্থাকে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশের জন্য পরামর্শক নিয়োগ করেছিল। তবে ব্যবসায়ীদের ‘অসহযোগিতা’র কারণে সেসসময় নীতিমালা প্রণয়ন ও ট্যারিফ বাড়ানো কোনোটাই করতে পারেনি সরকার।
নৌ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আইন অনুযায়ী দু’ বছর পরপর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বন্দরের ট্যারিফ চার্জ সংশোধন করার কথা।
এ ব্যাপারে নাসির আরিফ বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী পরামর্শকের সুপারিশের পর ট্যারিফ পুনর্নির্ধারণ করা হবে। ’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য ওঠানামার মান ও দক্ষতা বাড়ছে। এখন আগের চেয়ে কম সময় লাগে। ’
নাসির আরিফ জানান, গত দু’বছরে বন্দরের দক্ষতা বেড়েছে ২০ শতাংশ। এই সময়ে পণ্য ওঠানামার সময় ৫ দিন থেকে ৩ দিনে নেমে এসেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে নতুন অর্থবছরে প্রায় আড়াইশো কোটি টাকার উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে এসব উন্নয়নকাজ শেষ করা হবে।
বন্দরের দক্ষতা বাড়াতে প্রথম পর্যায়ে ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ৩৯ ধরণের এবং জুনে আরো প্রায় ৮৯ ধরণের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম স্থাপন করা হবে।
২০০৮-০৯ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রায় ১ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে। এর বিপরীতে বন্দর ব্যবস্থাপনায় ব্যয় হয় প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১০