ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ডেস্ক রিপোর্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১০
বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ঢাকা: বাংলাদেশ ও জাপানের আন্তঃবাণিজ্য-ব্যবধান কমাতে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ কাজে লাগিয়ে জাপানি ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও শিল্প স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাপান সফরের তৃতীয় দিন মঙ্গলবার নিউ ওতানিতে ওসাকার গভর্নর তরু হাশিমোতোর দেওয়া নৈশভোজে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী এ আহবান জানান।



অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, পুঁজি বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. এসএ সামাদ, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব এমএ করিম, পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস, প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ ও এফবিসিসিআই সভাপতি একে আজাদসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জাপানি ব্যবসায়ী নৈশভোজে অংশ নেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাপানি বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের বলেন, ‘আপনাদের উচিত আমাদের উদার বিনিয়োগনীতির সুযোগ নিয়ে সম্ভাবনাময় বিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ওষুধ, আইটি, অবকাঠামো, পরিবহন ও বস্ত্রখাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসা। ’

এ প্রসঙ্গে কর-অবকাশ, যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক রেয়াত, রয়ালটি মওকুফ, শতভাগ বিদেশি ইক্যুইটি অনুমোদন, অবাধ নিষ্ক্রমণ নীতি এবং নিষ্ক্রমণকালে লভ্যাংশ ও মূলধনের পূর্ণ পুনর্প্রেরণ সুবিধাসহ তাঁর সরকারের উদার বাণিজ্যনীতির বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমান শক্তিশালী সামষ্টিক অর্থনৈতিক বুনিয়াদ, আর্থ-সামাজিক স্থিতি, সস্তা শ্রম, ১৫ কোটির বেশি ভোক্তার অভ্যন্তরীণ বাজার এবং দেড়শ’ কোটি মানুষের বিশাল দণি এশীয় বাজারের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ’

তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সত্ত্বেও ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে আমাদের প্রায় ৬ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হয়েছে এবং রপ্তানি ৪ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়েছে। ’

জাপানকে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য-অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে জাপানের রপ্তানির পরিমাণ একশ’ চার কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার। বিপরীতে জাপানে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ মাত্র ৩৩ কোটি মার্কিন ডলার। ফলে বাণিজ্য জাপানের অনুকূলে। ’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ ও জাপানি শিল্প-কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে এই অসমতা দূর করার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে আপনাদের দ্বিমত থাকার কথা নয়। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করেছে। চলতি অর্থবছরে পণ্য রফতানির পরিমাণ ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া প্রবাসীরাও দেশে বড় অঙ্কের অর্থ পাঠিয়ে থাকেন। চলতি বছর প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ। ’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও জাপান ভাল বন্ধু। দুই দেশ অভিন্ন মূল্যবোধ ও অঙ্গীকার পোষণ করে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে জাপানের বিনিয়োগের একটি ভূমিকা রয়েছে। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জেট্রো জাপানের জন্য বাংলাদেশকে এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহৎ লাভজনক ব্যবসায়িক স্থান হিসেবে পেয়েছে। অপরদিকে ৮৭ শতাংশ জাপানি ব্যবসায়ী বাংলাদেশে লগ্নি করতে প্রস্তুত আছেন। ’

তিনি বলেন, ‘দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন বিশেষত মহাসড়ক, পাতাল রেল, মনোরেল, রেলপথ, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সেরা মানের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে তাঁর সরকার সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের নীতি গ্রহণ করেছে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি সারের ফলে বর্তমান হৃদ্যতাপূর্ণ ব্যবসায়িক সুসম্পর্ক আরো প্রাণবন্ত হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।