ঢাকা: আন্তর্জাতিক বাজারে সারের মূল্য ওঠানামার কারণে দরপত্রের মাধ্যমে চুক্তি করেও সার না পাওয়ায় আগামী মৌসুমে সার সঙ্কট হওয়ার আশংকা রয়েছে।
এ ছাড়া গ্যাস সঙ্কটের কারণে সার উৎপাদন ব্যাহত হওয়া, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভুল বোঝাবুঝিও সার সঙ্কট তৈরি করতে পারে।
সূত্র জানায়, চলতি অর্থ বছরে ইউরিয়া সারের মোট চাহিদা ২৮ লাখ ৩১ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিসিআইসি সর্বাধিক ১১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন করতে পারবে। এতে সারের ঘাটতি থাকবে ১৬ লাখ ৮১ হাজার মেট্রিক টন।
ঘাটতি থাকা ১৬ লাখ ৮১ হাজার মেট্রিক টনের মধ্যে কাফকো বাংলাদেশ থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন, মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ৩ লাখ করে ৬ লাখ মেট্রিক টন এবং আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ৪ লাখ ৮১ হাজার মেট্রিক টন সার সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
সার সংগ্রহের এ পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদনও দিয়েছেন।
বিসিআইসির তথ্য অনুযায়ী, ২৬ অক্টোবর মঙ্গলবার পর্যন্ত ইউরিয়া সারের মজুদ রয়েছে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৪শ ৯১ মেট্রিক টন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সার সঙ্কট প্রসঙ্গে গত বুধবার বলেন, ‘উৎপাদন কম এবং মাঝে উৎপাদন বন্ধ থাকায় সারের মজুদ কম রয়েছে। তবে তা কাটিয়ে ওঠার নিরন্তর চেষ্টা চলছে। ’
সারের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে এবং সম্ভাব্য সার সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী গত ২৫ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একটি প্রতিবেদন পাঠান।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গ্যাস সঙ্কটের কারণে বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন ৪টি সার কারখানা চলতি বছরের এপ্রিল থেকে বন্ধ ছিল। সম্প্রতি গ্যাস সরবরাহ শুরু হলেও পর্যাপ্ত চাপ না থাকায় ইউরিয়া সারের উৎপাদন দৈনিক লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক হচ্ছে। একই কারণে কাফকো বাংলাদেশের উৎপাদনও বন্ধ রয়েছে। ’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘দরপত্রের চুক্তি অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ে সারের সরবরাহ দিতে না পারায় এরই মধ্যে মেসার্স আর কে এন্টারপ্রাইজ ঢাকা এবং মেসার্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনপুট ঢাকার নিরাপত্তা জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ২টি প্রতিষ্ঠানের ৭৫ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার দেওয়ার কথা ছিল। ’
আগামী মৌসুমে সঙ্কট এড়াতে এখন থেকেই সারের মজুদ গড়তে ওই প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় : ১৭১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১০