ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাজারে নতুন পেঁয়াজ, তবু ক্রেতার নাগালে আসেনি দাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৪
বাজারে নতুন পেঁয়াজ, তবু ক্রেতার নাগালে আসেনি দাম

ঢাকা: বাজারে নতুন দেশি পেঁয়াজ আসা শুরু হলেও দাম ক্রেতার নাগালে আসেনি। সরবরাহ প্রচুর থাকার পরও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি।

যদিও গত সপ্তাহের তুলনায় দাম সামান্য কমেছে, তবে তা এখনো অস্বস্তির পর্যায়ে বলছেন ক্রেতারা।  

তারা বলছেন, রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকলে এর দেখাদেখি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও আড়তদার দেশি পেঁয়াজেরও দাম বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে ভর মৌসুমেও দেশি পেঁয়াজের দাম কমার বদলে উল্টো বেশি দেখা যাচ্ছে। বাজারে প্রচুর সরবরাহ থাকার পরেও নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি বর্তমানে খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে।  

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজার, মেরাদিয়া হাট, বাসাবো বাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। আর পাইকারি বাজারে এই দেশি জাতের পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫-৯৫ টাকায়। তিন দিন আগেও পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ১০০ টাকার ওপরে।  

পাশাপাশি খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহেও একই দামে বিক্রি হয়েছে। আর পাইকারি বাজারে এই আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১০০ টাকায়। তবে কোনো কোনো বাজারে অল্প কিছু দোকান ছাড়া অধিকাংশ দোকানেই আমদানি করা পেঁয়াজ তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে বাজারে পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজিতে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় এবং আবহাওয়া কৃষকদের অনুকূলে থাকায় বাজারে  এ পণ্যের যোগান বেড়েছে। পেঁয়াজ চাষিরা এখন ফসল তুলছেন। এ কারণে বাজারে চাহিদার চাইতেও বেশি পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম এখনো রয়েছে অস্বস্তির পর্যায়ে।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. বাবু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘আজকের পাইকারি বাজারে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৪০০- ৪২০ টাকায়। আড়ত থেকে আমাদের প্রতি মণ পেঁয়াজ ৩ হাজার ১০০ টাকায় কিনতে হয়। বাজারে এখন নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ছে। আশা করা যায় দাম কমতে থাকবে। তবে আমরা যে দামে কিনি তার থেকে সামান্য লাভ করে ছেড়ে দেই। কয়েক হাত ঘুরে আমাদের কাছে আসতেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। আর এখানেই দাম বাড়ে। সিজনে পেঁয়াজের বাজারে অনেক মৌসুমি বিক্রেতা এসে অতি লাভ করতে চায়, সেজন্যও দামের ওপর কিছুটা প্রভাব পড়ে। ’

পেঁয়াজের দাম নিয়ে খিলগাঁও তিলপাপাড়া এলাকার খুচরা দোকানি মো. রনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ খুব একটা পাওয়া যাচ্ছে না। আর যেগুলো আছে তাও ভালো মানের নয়। দামও বেশি। দেশি নতুন পেঁয়াজ পাইকারি বাজার থেকে প্রতিকেজি ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। এই পেঁয়াজ আমরা বিক্রি করছি প্রতি কেজি ১০০ টাকায়। এই দামে বিক্রি না করলে খরচ দিয়ে পোষায় না। ’

পরিবারের জন্য পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাসাবো বাজারে এসেছেন সোলাইমান সবুজ নামের এক ক্রেতা। পেঁয়াজের দাম নিয়ে কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার ওপরে ছিল। যে কারণে অল্প পরিমাণ পেঁয়াজ কিনি বাসার জন্য। সেটা শেষ হলে আজকে বাজারে এসে শুনি পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বছর এই সময় পেঁয়াজের দাম নিয়ে নানা কারসাজি হয়। যে কারণে ভর মৌসুমেও আমাদের মত সাধারণ ক্রেতাদের বেশি দাম দিয়ে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। অথচ এই মৌসুমে পেঁয়াজের দাম হওয়া উচিত ছিল প্রতি কেজি ৫০ টাকার নিচে। ’

তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে হলেও জিনিসপত্রের দাম কমাতে বাজার সিন্ডিকেটকে কঠোর শাস্তির আয়তায় আনতে হবে। যে যার ইচ্ছা মত অন্যকে দেখে দাম বাড়াচ্ছে এই ধরনের মানসিকতা থেকে ব্যবসায়ীদের বেরিয়ে আসতে হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৪
ইএসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।