ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

খুলনায় ব্যবসায়ী-শ্রমিক দ্বন্দ্ব ॥ সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১০
খুলনায় ব্যবসায়ী-শ্রমিক দ্বন্দ্ব ॥ সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ

খুলনা: ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মধ্যেকার দ্বন্দ্বের জের ধরে রোববার খুলনা মহানগরীর সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।

নগরীর স্টেশন রোডের কাঁচামালের আড়ত তাজ ট্রেডিংয়ে চুরির ঘটনায় পুলিশ দুই শ্রমিককে গ্রেপ্তার করলে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।



গ্রেপ্তার শ্রমিকদের মুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা ২৬ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ধর্মঘট শুরু করে। চার দিন ধর্মঘটের পরে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান ও খুলনা সিটি মেয়রের মাধ্যমে মালিক-শ্রমিকের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়। শ্রমিকরা কাজ শুরু করলেও তাজ ট্রেডিংয়ে কাজ বন্ধ রাখে। এমনকি মামলা তুলে নেওয়াসহ বিপুল অংকের আর্থিক তিপূরণ দাবি করে।

পাল্টা কর্মসূচী হিসেবে খুলনা ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা, শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদাবাজী ও জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পেতে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার সকাল থেকে স্টেশন রোড, কদমতলা, হেলাতলা, নিক্সন মার্কেট, হেরাজ মার্কেট, কালীবাড়ী এলাকা, পিকচার প্যালেস এলাকা, ডাকবাংলা আক্তার চেম্বার, এশা চেম্বারসহ বড়বাজারের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।  

কদমতলা স্টেশন রোডের কাঁচামাল আড়তদার সমিতির সভাপতি আবুল বাশার পাটোয়ারী বাংলানিউজকে জানান, আবারও এরশাদ শিকদারের দোসররা খুলনার ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধের পায়তারা করছে। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুরিসহ নানা অপকর্র্ম করছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রতিদিন প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকা তি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, রোববার সন্ধ্যায় সংগঠনের সভা আহ্বান করা হয়েছে। ওই সভায় পরবর্তী কর্মসূচী নির্ধারিত হবে।

অন্যদিকে শ্রমিক সোহরাব হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সামান্য ঘটনায় মালিকদের সাথে শ্রমিকদের যে দ্বন্দ্ব হয়েছে তা ঠিক হয়নি। এতে সকলেই তিগ্রস্ত হচ্ছে। এর আগে চার দিন মালামাল ওঠানামা বন্ধ ছিল। এখন আবার মালিকরা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। এতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্র্রির প্রশাসক (অতিরিক্ত দায়িত্ব), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সতেন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, বর্তমানে খুলনা চেম্বারের নির্বাচিত কমিটি নেই। চেম্বারের প্রশাসক হিসেবে জটিলতা নিরসনে ব্যবসায়ীরা তার কাছে কোনো লিখিতভাবে জানাননি। বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সমাধানের চেষ্টা করছেন।

এদিকে গ্রেপ্তার শ্রমিকদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সকালে শ্রমিকরা বড়বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

ব্যবসায়ী-শ্রমিক দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুলনার ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জনজীবনে। বড় বাজারে হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের আন্দোলনের প্রভাব নিত্যপণ্যের দ্রব্যমূল্যের ওপরও পড়েছে। নতুন করে ব্যবসায়ীদের এ আন্দোলনের অবসান না ঘটলে পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়ার আশংকা করছেন সতেন্দ্র সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।