ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

বাঙালির রসগোল্লার আজ জন্মদিন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২২
বাঙালির রসগোল্লার আজ জন্মদিন রসগোল্লা

কলকাতা: ভালোবাসার দিবস যদি ১৪ ফেব্রুয়ারি হয় তাহলে রসিক রসগোল্লা প্রেমীর প্রেম দিবস আজ। হ্যাঁ, সোমবার এই ১৪ নভেম্বর দিনটি মিষ্টিপ্রেমী বাঙালির কাছে প্রেম দিবস।

বঙ্গবাসী দিনটাকে রসগোল্লা দিবস হিসেবে পালন করে।

২০১৭ সালের এই দিনটিতে প্রতিবেশী রাজ্য উড়িষ্যার সঙ্গে রসযুদ্ধে নেমে মমতার সরকার রসগোল্লাতে জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন অর্থাৎ জিআই এর স্বীকৃতি পেয়েছিল। অর্থাৎ গোটা বিশ্বে রসগোল্লার আদি বসতভিটে একসময়ের অবিভক্ত বাংলা। আর এর জনক কলকাতার বাগবাজারের বাসিন্দা নবীনচন্দ্র দাশ। ১৮৬৬ সালের কিছু সময়ের পর নবীনচন্দ্র দাশ রসগোল্লা সৃষ্টি করেন বলে প্রবাদ আছে। যদিও এ বিষয়ে মতভেদও আছে।

পুরোনো লেখাগুলি ঘাটলে মনে হতে পারে নদীয়া জেলার ফুলিয়ার হারাধন ময়রা বা কলকাতার ব্রজ ময়রা কিংবা বর্ধমানের গোপাল ময়রা অথবা মুর্শিদাবাদে আগেই আবিষ্কার হয়ে গিয়েছিল রসগোল্লা। ইংরেজি ১৮৪৬ থেকে ১৮৭৪ সালের মধ্যে এর উদ্ভব হয় বলে অনুমান। সম্ভবত ওই সময়কালে এলাকা ভেদে মিষ্টি নিয়ে বিস্তৃত গবেষণার ফসল রসগোল্লা হয়ে ফলেছে।

তবে হলফ করে বলা যায় যে, নবীন চন্দ্র দাশই রসগোল্লায় নরম অনুভুতি এনেছিলেন। যাকে বলা হয় স্পঞ্জ রসগোল্লাকারক এবং সেটিকে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেন তিনিই। দেখতে দেখতে নবীনের স্পঞ্জ রসগোল্লার দেড়শ বছর পূর্তি হল কয়েকবছর আগে।

এরকম একটা রসমিষ্টির জন্য মমতার সরকার প্রতিবেশী রাজ্য উড়িষ্যার সঙ্গে কম ফাইট করেননি। দীর্ঘদিন চলেছিল আইনি লড়াই। উড়িষ্যায় যুক্তি ছিল ভগবান জগন্নাথের প্রসাদীভোগ হিসেবে তারই প্রথম তৈরি রসগোল্লা। অপরদিকে মমতার তথ্য ছিল নবীন চন্দ্রের ইতিহাস। টানা আইনি লড়াইতে জাতি-ধর্মের উর্ধ্বে গিয়ে আদালত রায় দিয়েছিল বাংলার পক্ষেই। তাহলে তার জন্মদিন বা জন্মদিবস বাংলায় পালন হবে না, তা হয় নাকি!

বাংলায় ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান, কিংবা ইলিশ-চিংড়ি অথবা ঘটি-বাঙাল, নানা ইস্যুতে বাঙালি মাঝেমধ্যে আড়াআড়ি ভাগ হয়ে যায়। তবে বাঙালি এক জায়গায় এসে একত্র হয় এবং রসসিক্ত হয়ে পড়ে, সেটি হল রসগোল্লা। আর তাই  ইংরেজির অভিধানেও ঢুকে গেছে রসগোল্লা। টিনে ভরে বিদেশ যাত্রা বহুকাল আগে থেকে।

সৈয়দ মুজতবা আলী রসগোল্লা নিয়ে লিখলেন, ‘রসের গোলক, এত রস কেন তুমি ধরেছিলে হায়/ইতালির দেশ ধর্ম ভুলিয়া লুটাইলো তব পায়। ’ জানেন কি সেই রসগোল্লাকে ইংরেজিতে কী বলে? মনে পড়ছে না? মনে করিয়ে দিচ্ছি, রসগোল্লার ইংরেজি, ‘সিরাপ ফিলড রোল’। অবাঙালিরা বলেন, ‘রসগুল্লা’। তবে যে, যে নামেই ডাকুক -ব্যাকগ্রাউন্ডটা কিন্তু খাঁটি বাঙালিয়ানা। আর তাই আজও কলকাতায় পালন হয় রসগোল্লা দিবস। যাকে রসগোল্লা প্রেমীরা বলেন ‘রসগোল্লার জন্মদিন’।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২২
ভিএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।