ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কলকাতায় বিজয় দিবস উদযাপন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২১
কলকাতায় বিজয় দিবস উদযাপন

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে মহাসমারোহে উদযাপিত হলো বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস। বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান।

এরপর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর লিখিত বাণী পাঠ করা হয়। পরে এক ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে কলকাতায় বাংলাদেশ ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

এদিন বিকেলে মিশন প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোকচিত্র ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান ব্যানার্জীসহ বিশিষ্টজনেরা।  

বিমান ব্যানার্জী বলেন, আমি মনে করি বাংলাদেশের বিজয় দিবস নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের আবেগ অনেকটা আলাদা। যে আবেগ এই বাংলায় আছে, তা ভারতে নেই। ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী থেকেও আমাদের দুই বাংলার মৈত্রী বেশি। ফলে বাংলাদেশের বিজয় দিবস পশ্চিমবঙ্গবাসীকে আলাদাভাবে নাড়া দেয়। ভারত এবং বাংলাদেশ অনেক রক্তক্ষয়ের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তবে কিছু চক্রান্তকারী দুই বাংলার সম্পর্ক নষ্ট করে দিতে চাইছে। তা আমাদের রক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, আমার জন্ম বরিশালে। ফলে বাংলাদেশ নিয়ে আমার যে অনুভূতি রয়েছে, তা আমি বলে বোঝাতে পারবো না। তাদের অতিথি অ্যাপায়ন এক কথায় অনবদ্য। দুই বছর আগে আমি বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। আমি যখনই গিয়েছি তিস্তা নিয়ে আমাকে একাধিক প্রশ্ন করা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ উদ্বিগ্ন। তিনি দিল্লির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী চান বাংলাদেশের যেমন উন্নয়ন হয়, তেমনি পশ্চিমবঙ্গও উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।

আলোচনা অনুষ্ঠানের পর বিজয় উৎসবে জনপ্রিয় গায়ক অনুপম রায়সহ খ্যাতনামা শিল্পীদের পরিবেশনায় জমে ওঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তর কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দিবসটি উদযাপন করেছে। মূল ফটকের সামনে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ভারতীয় সেনার তিন বাহিনীর প্রধানরা পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

প্রসঙ্গত, ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে এগিয়ে নিয়ে যান। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের হত্যা যজ্ঞে মেতে ওঠে।

২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সর্বস্তরের বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের পাশে সার্বিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসে ভারত। সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং কোটি বাঙালিকে আশ্রয় দেয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভারত।

দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান। ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর দুই লাখ মা-বোনের ত্যাগ আর তিতিক্ষা এবং কোটি কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও গৌরবগাথায় পরাধীনতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পায় বাঙালি জাতি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, ১৬ ডিসেম্বর ২০২১
ভিএস/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।