চট্টগ্রাম: ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে ফিরতে শুরু করেছেন বিভিন্ন অঞ্চলের জেলেরা। আগ থেকেই তারা জাল-নৌকা নিয়ে কর্ণফুলী নদীর তীরে জড়ো হন সাগরে যেতে।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকালে নগরের ফিশারিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মধ্যরাতেই অনেকেই পাড়ি দিয়েছেন সাগরে।
বৃহস্পতিবার রাতেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে কেউ মধ্যরাতে, কেউ কেউ ছুটেছেন ভোররাতে। সকালেও অনেকে রান্নার উপকরণ লাকড়ি যোগাড় করছেন। আবার কেউ কেউ শিকার করা মাছ সংরক্ষণ করতে ককশিটের বক্স ও বরফ প্রস্তুত করছেন।
দীর্ঘদিন সাগরে মাছ না ধরায় জালে বিপুল মাছ ধরা পড়ার আশা করছেন জেলেরা। তারা বলছেন, ২২ দিন ধরে সাগরে নামায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। এসময়ে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ অবাধে বিচরণ ও বংশবিস্তার করেছে। ফলে এবার প্রচুর বড় আকারের ইলিশ পাওয়ার আশা করছি।
মহেশখালী থেকে আসা জেলে তামজিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মাঝারি কিংবা বড় সাইজের ট্রলার নিয়ে সাগরে নামতে খরচ হয়ে থাকে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। এবার ২২ দিন বেকার থাকায় পুঁজি শেষ করে ধার-দেনায় জর্জরিত আমরা। বাড়ি থেকে এসেছি তিনদিন আগে। এসে জাল, নৌকা ঠিক করছি। সব ঠিকঠাক করে আজকেই রওনা দিব মাছ ধরতে।
কর্ণফুলী এলাকার জেলে মোহাম্মদ মাহফুজুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা থাকায় সাগরে যেতে পারিনি। নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। সাগরে যেতে পারবো বলে খুশি লাগছে।
ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জেলেদের কিছু মাছ ধরার ট্রলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাদের ট্রলার ভালো আছে তারাই সাগরে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে অধিকাংশ ট্রলার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সাগরে নামতে পারছেন না। তারাও ট্রলার মেরামতের কাজ করছেন পুরোদমে।
নৌকার মিস্ত্রী শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অলস পড়ে থাকায় অনেক ট্রলার ভেঙে গেছে। সেগুলো মেরামত করার জন্য মালিকরা আমাকে নিয়ে আসছে। ঘাটের নৌকার কাজও করতে হচ্ছে। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবেও কিছু ট্রলারের ক্ষতি হয়েছে। সেগুলোও মেরামত করছি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বাংলানিউজকে বলেন, জেলেরা ২২ দিনের সরকারি নির্দেশনা পালন করেছে। নিষেধাজ্ঞার সময় কোনো ট্রলার সাগরে যেতে দেওয়া হয়নি। তাই নিষেধাজ্ঞার পরপরই জেলেরা গভীর সাগরে মাছ শিকার করতে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
বিই/টিসি
