ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মোনাজাত ও বক্তব্যকে বিকৃত করে অপপ্রচার: জেলা প্রশাসক 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২
মোনাজাত ও বক্তব্যকে বিকৃত করে অপপ্রচার: জেলা প্রশাসক 

চট্টগ্রাম: মোনাজাতে অংশ নেওয়াকে সামনে এনে বক্তব্য খণ্ডিত ও বিকৃত করে একটি পক্ষ অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।  

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মমিনুর রহমান বলেন, হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে কে মোনাজাত ধরলো, কে গীতা পাঠ করলো, কে বাইবেল পড়লো এটা জেলা প্রশাসকের দেখার বিষয় না। জেলা প্রশাসন একটি জনমানুষের কার্যালয়।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সকলের প্রবেশাধিকার রয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ছিল জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। বিভিন্ন প্রার্থীর অনেক কর্মী, সমর্থক, দলীয় নেতা এবং উৎসুক জনতায় পরিপূর্ণ ছিল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। এমনকি বারান্দা থেকে নীচতলা পর্যন্ত উৎসুক জনতা। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে একই তারিখে সকাল ১০ টা হতে সম্প্রীতি সমাবেশ, আসন্ন দুর্গাপূজার প্রস্তুতিমূলক বিশেষ সভা, বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের চেক বিতরণের কর্মসূচী ছিল। সম্প্রীতি সমাবেশের প্রস্তুতিমূলক সভা চলাকালীন জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলকারীরা একযোগে সম্মেলন কক্ষে প্রবেশ করেন এবং হুড়োহুড়ি করে জেলা প্রশাসকের নিকট মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।  

তিনি আরও বলেন, মানুষের ভিড়ের কারণে সভাকক্ষে এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিবর্গ, মিরসরাইতে রেলক্রসিং দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিবর্গ ও গত ১৪ সেপ্টেম্বর জোরারগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪ জন ব্যক্তির আত্মার মাগফেরাত কামনায় পূর্ব থেকেই মোনাজাতের সিদ্ধান্ত ছিল। মনোনয়নপত্র দাখিলকালীন ভিড়ের মধ্যে একজন মোনাজাত ধরেন। বিক্ষিপ্তভাবে সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত অনেকেই মোনাজাতে অংশ নেয়। হৈ চৈ এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে সকলকে মোনাজাত পরিচালনায় নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। মোনাজাতে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার কথা মোনাজাতে বলা হয়নি।  

মমিনুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসক দুর্গাপূজা এবং সম্প্রীতি সমাবেশের প্রস্তুতিমূলক সভায় দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং কোনো ষড়যন্ত্র বা নাশকতাকারীদের দ্বারা যাতে আসন্ন দুর্গাপূজায় কোনোরূপ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সে জন্য সকলের সহযোগিতা চাওয়া হয়। কোনো দলের পক্ষে ভোট চাওয়া বা জেলা পরিষদ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার মতো কোনো বক্তব্য সেদিন দেওয়া হয়নি।  

এদিকে, জেলা প্রশাসককে পরিকল্পিতভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে মনে করছেন চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনেরাও। তারা মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।  

সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক বাংলানিউজকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানকে চিনি। তিনি শতভাগ সৎ, নির্বীক ও সাহসী একজন অফিসার। যিনি দেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করেন। জেলা প্রশাসকের নানা জনকল্যানমুখী কাজের কারণে আগ থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে চক্রটি পুনরায় সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। তারা পৃথক দুটি ঘটনাকে একসঙ্গে করে নানা অপপ্রচার শুরু করেছে।  

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড চট্টগ্রামের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম জেলার পাহাড় খেকো, ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার মূল্যবান খাসজমি উদ্ধার করেছে। বর্তমানে সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুরের প্রায় ৮০০০ কোটি টাকার ৩ হাজার ১০০ একর সরকারি খাস জমি উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। জেলা প্রশাসকের এ সকল দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ডে একটি চক্র ক্রমাগতভাবে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আমরা চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২
বিই/টিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।