ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে মাকে গুলি করেন মাদকাসক্ত মাঈনুল

মিনহাজুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে মাকে গুলি করেন মাদকাসক্ত  মাঈনুল

চট্টগ্রাম: ছেলের গুলিতে মা খুনের ঘটনায় পটিয়ায় চলছে আলোচনা সমালোচনা। স্বজনরা বলছেন, নিয়মিত নেশা করতো মাঈনুদ্দিন মোহাম্মদ মাঈনু।

সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক ঝামেলায় মা জেসমিন আক্তারকে খুন করে ছেলে।  

সোমবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনার পর বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

 

নিহত জেসমিন আক্তারের ভাই জামাল উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, তিন ভাই ছয় বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন আমার বোন জেসমিন। সে অনেকদিন অস্ট্রেলিয়া ছিল। গত পৌরসভা নির্বাচনের সময়ে দেশে এসেছে। আবার অস্ট্রেলিয়া চলে যেতো। হঠাৎ শামসুল আলম ভাইয়ের মৃত্যু কারণে অস্ট্রেলিয়া যাওয়া হয়নি।  

তিনি আরও বলেন, আমার বোনের হত্যার বিচার চাই। আমার ভাগিনা মাঈনুকে যারা আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিয়েছে তাদেরও বিচার চাই। গুলির করার পর মাঈনুকে এলাকাবাসী খুঁজছে। মাঈনু নেশাগ্রস্ত ছিল। সে মাদক গ্রহণ করলে কাউকে চিনতে পারতো না।

জেসমিনের আক্তারের মেয়ে শায়লা শারমিন নিপা বলেন, আমার দুলাভাই মারা গেছেন ৪০ দিনও হয়নি। তাই আমরা সম্পত্তি নিয়ে কোনো কথা বলতে চায়নি। কিন্তু মাঈনুলের বউ ও তার শাশুড়ি সবসময় সম্পত্তির কথা বলতো৷ তাদের কথা শুনে সম্পত্তির জন্য বিভিন্ন সময় মায়ের সঙ্গে ঝামেলা করতো। শ্বশুর বাড়ির উস্কানিতেই মাঈনুল মাকে গুলি করে হত্যা করে।

নিহত জেসমিন আক্তারের ভাগিনা সাজ্জাদ বাংলানিউজকে বলেন, মাঈনু সবসময় আমার খালাকে নানা বিষয়ে বিরক্ত করতো। গত রমজানেও সে খালার হাতে ছুরিকাঘাত করে। ওই সময় খালাকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসি। তখন মাকে খুঁজে বের করতে আমাদের বিরক্ত করা শুরু করে।  

তিনি আরও বলেন, খালা হজ্জে যাওয়া জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সৌদি আরব হজ্জ করে, সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়া চলে যেতো। মাঈনুল ছোট বেলা থেকে দুষ্টুমি করতো।  

জেসমিন আখতারের আরেক আত্মীয় শাহাজাদা মিজান বাংলানিউজকে বলেন, মাঈনুল মাদকাসক্ত ছিলেন। পরিবারের সম্মতি ছাড়া বিয়ে করেছেন। এখনো অনুষ্ঠানিকভাবে বাড়িতে আনা হয়নি। বাবার মৃত্যু পর সব জায়গা সম্পত্তি ও নগদ টাকা সে ভোগ করতে চেয়েছিল।  

তিনি আরও বলেন, মাঈনুল নিজে তার বাবার কুল খানির জন্য ব্র্যাক ও সোনালী ব্যাংকের পটিয়া শাখা থেকে টাকা উত্তোলন করতে যায়। সেখানেও মাঈনুল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। বাড়িতে এসে হঠাৎ করে কোমর থেকে পিস্তল বের করে দুইটি গুলি করে। একটি গুলি চোখে এক পাশে লেগেছে, সেটিতেই মৃত্যু হয়েছে।  

প্রসঙ্গত, পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জাতীয় পার্টির নেতা সদ্য প্রয়াত শামসুল আলম মাস্টারের স্ত্রী জেসমিন আক্তার। এক মাস আগে শামসুল আলম মাস্টার মারা যান। তার দুই ছেলে মাঈনুল মোহাম্মদ মাঈনু ও মাশফীকুর রহমান মাশফি। এছাড়া এক মেয়ে শায়লা শারমিন নিপা সবার বড়। মাশফীকুর রহমান মাশফি অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
এমআই/টিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।