চট্টগ্রাম: জান্নাতুল মাওয়া। আনোয়ারা উপজেলার একটি সরকারি ব্যাংকে কর্মরত।
শুধু জান্নাতুল মাওয়া নন, উপজেলার অনেক কর্মজীবী নারী তাদের সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তাদের এ সমস্যার কথা চিন্তা করেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জুবায়ের আহমেদ এই ডে কেয়ার সেন্টারটি তৈরি করেছেন।
জান্নাতুল মাওয়া বলেন, প্রতিদিন একই চিন্তা। সন্তানকে কার কাছে রেখে যাবো। নিরাপত্তা কি? চাকরিতে গিয়েও শান্তি নেই। আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন উদ্যোগ সত্যিই অনেক আনন্দের। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরি ডে কেয়ার সেন্টারে বাচ্চাকে রেখে যেতে পারলে শান্তি পাবো।
৮শ বর্গফুটের দুটি কক্ষে অত্যাধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নান্দনিক পরিবেশে তৈরি করা হয়েছে ডে কেয়ার সেন্টারটি। এছাড়াও সেখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে নিরাপত্তার বিষয়টি।
ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে আল্লামা আবুল খায়ের ফাউন্ডেশন। পরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হবে। তারা এ ডে কেয়ার সেন্টারে সহায়তা করবেন। এছাড়াও যারা ডে কেয়ার সেন্টারে বাচ্চা রাখবেন তাদের জন্য ন্যূনতম ফি নির্ধারণ করা হবে। যার যে রকম আয় তার সে রকম ফি নির্ধারণ করা হবে। প্রথমে এখানে ১০ জন বাচ্চা রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাদের দেখাশোনা করার জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২ জন নারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই ডে কেয়ার সেন্টারে উপজেলার সরকারি দফতরে কর্মজীবী নারীদের বাচ্চারা অগ্রাধিকার পাবে। এরপর পাবে সরকারি স্কুল-কলেজ, ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বাচ্চারা।
জানা গেছে, আগামী ১ জুলাই থেকে ডে কেয়ার সেন্টারটির কার্যক্রম শুরু হবে। আগ্রহী কর্মজীবী মায়েরা তাদের ৬ বছরের চেয়ে ছোট বাচ্চাকে এই ডে কেয়ার সেন্টারে রাখতে পারবেন। বাচ্চাটির পরিবারের বার্ষিক আয় কত তার ওপর ভিত্তি করে মাসিক সেবামূল্য নির্ধারণ করা হবে।
প্রতি রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল হতে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ডে কেয়ার সেন্টারটি খোলা থাকবে। শুক্রবার ও শনিবার এবং সরকারি ছুটির দিনে বন্ধ থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জুবায়ের আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, নিজের ছোট সন্তানকে নিয়ে কর্মজীবী মায়েদের যে কতটুকু উদ্বেগ, উৎকন্ঠা তা বিশেষভাবে বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পূর্বতন কক্ষটিকে ডে কেয়ার সেন্টারে রূপান্তরের পরিকল্পনা করেছিলাম। কাজ শেষ হয়েছে। আরও কিছু খেলনা ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার উপযোগী উপকরণ যুক্ত করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২২
বিই/এসি/টিসি