ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নাম পরিবর্তন করে ৬ বছর পর হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২২
নাম পরিবর্তন করে ৬ বছর পর হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার ...

চট্টগ্রাম: নিজেকে আত্মগোপনে রাখার জন্য লেবাস পরিবর্তন করে লম্বা দাড়ি রেখে পায়জামা পাঞ্জাবি পরিধান করতেন। তাবলীগ জামাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলায় নিজের নাম পরিবর্তন করে পরিচয় দিতেন আব্দুর রহমান নামে।

যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। ৬ বছর পর অবশেষে হত্যা মামলার সেই পলাতক আসামি মো. মুসা হোসাইনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের ইনচার্জ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা।  

অভিযুক্তরা হলেন, চাঁদপুর জেলার চাঁদপুর সদর থানার পৌরসভার অধ্যাপক পাড়ার মো. হোসেনের ছেলে মো. মুসা হোসাইন (৪৭) ও একই জেলার ফরিদগঞ্জ থানার সুইবিদপুর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. দেলওয়ার হোসেনের ছেলে মো. হাবিবুর রহমান সাজু (৪৬)।  

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের ইনচার্জ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর বিকেলে গ্রেফতার মুসা হোসাইন ও হাবিবুর রহমান সাজু আগ্রাবাদ টিএন্ডটি কলোনিতে থাকা অবস্থায় নিহত মনসুর আহাম্মদকে মুসা হোসাইন ফোন দেয়। মুসার ফোন পেয়ে মনসুর আহাম্মদ আগ্রাবাদ টিএন্ডটি কলোনির মুসার সঙ্গে দেখা করতে টিএন্ডটি কলোনিতে সাজুর বাসায় যায়। সাজুর রুমে ওয়ারড্রপের ওপর একটি ব্যাগ মনসুরের পছন্দ হয়। সেই ব্যাগ থেকে সাজু ছোট একটি পিস্তল বের করেন। সেই পিস্তল মুসার হাত থেকে মনসুর পিস্তলটি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করার সময় তার হাতের আঙুল পিস্তলের ট্রিগারে লেগে তার বাম চোখে গুলিবিদ্ধ হয়। মুসা ও সাজু মনসুরকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসককে মুসা ও সাজু জানিয়েছিল মনসুর চোখে পাথরের আঘাত পেয়েছে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনসুরের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে মুসা ও সাজু পলাতক ছিলেন। ঘটনার ছয় মাস পরে মনসুরের স্ত্রী হালিশহর থানায় একটি মামলা করেন।  

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার মুসা আত্মগোপনের জন্য অবৈধভাবে ভারতের আগরতলায় অনুপ্রবেশ করেন। সেখানে অবস্থান করলেও নিজের নামে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করতে না পারায় পুনরায় বাংলাদেশে চলে আসেন। মুসা নিজেকে আত্মগোপনে রাখার জন্য পূর্বের বেশভুষা পরিবর্তন করে লম্বা দাড়ি রেখে পায়জামা পাঞ্জাবি পরিধান করে তাবলীগ জামাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলায় নিজের নাম পরিবর্তন করে আব্দুর রহমান নামে পরিচয় দিতেন।  

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নিহত মনসুর আহাম্মদ বিএসআরএমে চাকরি করতেন ও মুসা গাড়িচালক। সাজু ঠিকাদারি ব্যবসার পাশাপাশি স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের গ্রামের বাড়ি একই জেলা চাঁদপুর হওয়ায় তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। মুসা চাঁদপুর হতে যাত্রী নিয়ে নগরে আসলে সাজু ও মনসুর আহাম্মদকে ফোন করতেন। নারায়ণগঞ্জ জেলার লাঙ্গল বন্ধ প্রেমতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. মুসা হোসাইন গ্রেফতার করা হয়। মুসার রিমান্ডে তথ্যের ভিত্তিতে নগরের আগ্রাবাদ বাদামতলী এলাকা থেকে মো. হাবিবুর রহমান সাজুকে গ্রেফতার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, ২৪ মার্চ, ২০২২
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।