ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

করোনা আক্রান্তের শ্বেতকণিকা বাড়লেই মৃত্যুঝুঁকি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২১
করোনা আক্রান্তের শ্বেতকণিকা বাড়লেই মৃত্যুঝুঁকি ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর শ্বেতকণিকা ২৬ হাজার ১১০ দশমিক ৬ শতাংশের বেশি হলেই মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায় বলে মনে করেছেন গবেষকরা।

আইসিইউতে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত রোগীদের রক্তের বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা বিশ্লেষণ করে মৃত্যুঝুঁকির সম্ভাব্যতা যাচাই নিয়ে তিন প্রতিষ্ঠানের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে আসে।

গবেষণায় দেখা যায়, চট্টগ্রামে আইসিইউতে থাকার ১৫৬ জন রোগীর মধ্যে ৬৬ শতাংশ রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন। এর মধ্যে ৭৩ শতাংশ রোগীর বয়স পঞ্চাশোর্ধ।

এছাড়া আইসিইউতে মৃত্যুবরণ করা ৮৯ দশমিক ১ শতাংশ রোগী বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিলেন।

গবেষণায় আরও দেখা যায়, আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী ৭৫ দশমিক ৫ শতাংশ রোগীর রক্তে শ্বেতকণিকার মাত্রা ২৬ হাজার ১১০ দশমিক ৬  ঘন মিলিমিটারের বেশি হলে মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।  

এছাড়া মৃত্যুবরণ করা রোগীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ রোগীর রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কম। যার গড় পরিমাণ ১০ দশমিক ৬ গ্রাম। আবার ৭২ শতাংশ রোগীর রক্তে অক্সিজেনের চাপ কম থাকায় মৃত্যুবরণ করেছেন বলে দাবি গবেষকদের।

আইসিইউতে মৃত্যুবরণকারী রোগীদের ওপর গবেষণায় আরও উঠে আসে, রক্তের অন্যান্য উপাদানের মধ্যে ৯৮ দশমিক ৪ শতাংশ রোগীর রক্তে সি-রিঅ্যাক্টিভ প্রোটিনের পরিমাণ ছিল ১০২ দশমিক ৪ মিলিগ্রাম। অথচ রক্তে এর স্বাভাবিক মাত্রা ৫ মিলিগ্রাম। এছাড়া ৭৫ শতাংশ রোগীর রক্তে ফেরিটিনের পরিমাণ পাওয়া যায় ৯০১ দশমিক ৫ ন্যানোগ্রাম। যা স্বাভাবিকের চেয়ে অতি উচ্চমাত্রায় রয়েছে। আবার ৬৫ দশমিক ২ শতাংশ রোগীর রক্তে ডি-ডাইমারের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি রয়েছে। যার মাত্রা ছিল ২ দশমিক ০২ মাইক্রোগ্রাম এবং ৭৬ দশমিক ১ শতাংশ রোগীর রক্তে ট্রাইপোনিনের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি রয়েছে, যা মাত্র ০ দশমিক ৮১ ন্যানোগ্রাম।

চলতি বছরের মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত এ গবেষণায় যুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের গবেষকরা।

বুধবার (৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে এ গবেষণার বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করা হয়। সিভাসু উপাচার্য ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. ইসমাইল খান এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেন।

গবেষকরা বলছেন, আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগীদের যদি রক্তের বিভিন্ন উপাদানের বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রাখা যায়- তাহলে মৃত্যুঝুঁকি কমে আসবে।

গবেষণাকাজে আরও যুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক বিদ্যুৎ বড়ুয়া, সহকারী অধ্যাপক ইফতেখার আহমেদ, জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট মো. আবদুর রব, জুনিয়র কনসালট্যান্ট রাজদ্বীপ বিশ্বাস, জুনিয়র কনসালট্যান্ট মৌমিতা দাশ, সিভাসুর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ত্রিদীপ দাশ, সিভাসুর মলিকুলার বায়োলজিস্ট প্রণেশ দত্ত, সিরাজুল ইসলাম ও তানভির আহমেদ নিজামী।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২১
এমআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।