ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

খালেদা জিয়ার মধ্যে শিক্ষার আলো নেই: হানিফ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২১
খালেদা জিয়ার মধ্যে শিক্ষার আলো নেই: হানিফ

চট্টগ্রাম: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, মির্জা ফখরুলের জন্য আমার কষ্ট হয়। তিনি খারাপ মানুষ এটা আমি বলতে পারব না।

উনার মধ্যে শিক্ষার আলো আছে। কিন্তু উনার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে শিক্ষার আলো নেই।
এসএসসি পাশ করেছেন কি না সন্দেহ আছে। শিক্ষার আলো নেই বলেই তিনি জাতির পিতাকে হত্যার দিনে কেক কেটে উল্লাস করতে পারেন।

শনিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে নগরের জামালখানে রীমা কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর আওয়ামী লীগ যৌথভাবে আয়োজিত  আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রয়াত আতাউর রহমান খান কায়সারের স্মরণ সভায় বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

হানিফ আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপিকে মানুষ কেন ভোট দেবে? পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে মির্জা ফখরুল বললেন, আওয়ামী লীগ থেকে বাঁচার জন্য ভোট দেবে। বিএনপির নিজের কোনো অর্জন নেই। ফখরুল সাহেব নিজেদের কোনও অর্জনের কথা বলতে পারেননি। এদেশের জনগণ আপনাদের আর রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায় না। মানুষ পুড়িয়ে মারার মতো পৈশাচিক কর্মকাণ্ড যারা করে, তাদের মানুষ আর ক্ষমতায় আনবে না।
তিনি আরও বলেন, আতাউর রহমান খান কায়সার ভাইদের মতো ভালো মানুষেরা চলে গেছেন। রাজনীতিতে আজ ভালো মানুষের বড় অভাব। শুধুমাত্র বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় এদেশের কিছু বিরোধী দল। অথচ তারাও সরকারে ছিল, দেশের কোনও উন্নয়ন করতে পারেনি, তারাই আজ আমাদের সমালোচক।

তিনি বলেন, বেগম জিয়ার জন্মদিন কখনোই ১৫ আগস্ট ছিল না। ১৯৯৩ সালে যখন তিনি প্রধানমন্ত্রী, তখন হঠাৎ তিনি ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালনের ঘোষণা দিয়ে জাতির শোকের দিন নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করতে শুরু করেন। টেলিভিশন খুললেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দেখি, শুধু সরকারের সমালোচনা করছেন।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেকমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কঠিন দুঃসময়ে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে আতাউর রহমান খান কায়সার, এম এ মান্নান, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, আক্তারুজ্জামান বাবু ভাইয়েরা কোনোদিন পিছপা হননি। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার সময় যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রাম আমরা তাদের নেতৃত্বে করেছি। রাজপথে মার খেয়েছি, আমার পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে এম এ মান্নান, আবু সালেহ ভাইয়ের নেতৃত্বে রাজপথে মিছিল করেছি। মন্ত্রী ব্যারিস্টার সুলতানের সন্ত্রাসীরা সেদিন আমাদের ওপর হামলা করেছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যারা একদিন রাজপথে একসঙ্গে ছিলাম, সবাই আমাকে ছেড়ে চলে গেছেন। শুধু আমি আছি। আমারও চলে যাওয়ার কথা ছিল আগেই। কিন্তু আল্লাহ আমাকে এখনও রেখে দিয়েছেন। নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ, আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করব। শেখ হাসিনার উন্নয়নের প্রতি অবিচল আস্থা রাখব, এই শপথ গ্রহণ করি। ’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, আমরা অনেকেই নেতা হওয়ার পরে আর তৃণমূলের দিকে ফিরে তাকাই না। স্বাভাবিক শিষ্টাচার, সৌজন্যটুকু পর্যন্ত দেখাই না।

তিনি বলেন, আতাউর রহমান খান কায়সার আমাদের নেতা ছিলেন, কর্মীবান্ধব নেতা ছিলেন, দলের প্রতি অন্তঃপ্রাণ ছিলেন। ওয়ান ইলেভেন যখন আসে, শেখ হাসিনা যাদের নেতা বানিয়েছিলেন, দলের বিভিন্ন পদপদবী দিয়েছিলেন, তাদের অনেক রাজনৈতিক নেতা সেদিন বিশ্বাসঘাতকতা করে সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন। তখন একমাত্র কায়সার ভাই আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে সুধাসদনের সামনে গিয়ে নেত্রীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। নেত্রীর প্রতি বিশ্বস্ততার প্রমাণ দিতে তিনি অন্য নেতাদের মতো কুণ্ঠাবোধ করেননি। তিনি সবসময় আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।

স্মরণ সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আতাউর রহমান খান কায়সার এবং উনার স্ত্রী না থাকলে আমাদের পড়ালেখা হতো কি না আমি জানি না। কারণ কায়সার আঙ্কেল এমন নেতা ছিলেন, মাঠের নেতা মহিউদ্দিনের ঘরে আগুন জ্বলছে কি না সেই খবর তিনি সবসময় রাখতেন। উনার নিজের দুই মেয়ে যে স্কুলে পড়েছেন, আমি এবং আমার বোন টুম্পাকেও সেই বাওয়া স্কুলে তিনি ভর্তি করেছিলেন। শিশু বয়স থেকে আমি উনার সান্নিধ্য পেয়েছি। আমার বাবা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী খুবই রাগী প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। কিন্তু কায়সার আঙ্কেলের সামনে যখন বসতেন তখন উনার কথা খুব মনযোগ দিয়ে সম্মানের সঙ্গে শুনতেন।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আতাউর রহমান খান কায়সারের মেয়ে সংরক্ষিত মহিলা  আসন ৩১ এর সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান, কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান এবং সাংসদ নজরুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমানসহ আরো অনেকে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২১ 
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।