ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে হামলা, ইভিএম ভাঙচুর

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২১
ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে হামলা, ইভিএম ভাঙচুর ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের একটি ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে হামলা এবং ইভিএম ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (২৭ জানুয়ারি) পাথরঘাটা ওয়ার্ডের পাথরঘাটা বালিকা স্কুল ভোটকেন্দ্রে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা এই হামলা চালান।

এ ঘটনার পর ওই ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ ইসমাইল বালীকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে আটক করে কোতোয়ালী থানায় নেওয়া হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) পলাশ কান্তি নাথ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ কয়েকশ লোক পাথরঘাটা বালিকা স্কুল ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে হামলা চালান। এ সময় তারা ভেতরে ঢুকে ইভিএম ভাঙচুর করেন। ভোটকেন্দ্রে হামলা এবং ভাঙচুরের কারণে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। হামলার সময় কেন্দ্রের সামনে অপেক্ষমাণ তিনটি বাসসহ বেশ কিছু গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে।

ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. শাহাজাহান বাংলানিউজকে জানান, পাথরঘাটা বালিকা স্কুল ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ১ হাজার ৫৩৩ জন। সকাল থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছিলো।

তিনি বলেন, ১১টার দিকে হঠাৎ কয়েকশ লোক ভোটকেন্দ্রের চারপাশে অবস্থান নিয়ে হামলা চালান। তারা ভেতরে ঢুকে ভোটগ্রহণের কাজে ব্যবহৃত ৪টি ইভিএম এর মধ্যে ৩টি ভেঙে ফেলেন। এ সময় ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।

পোলিং অফিসার মো. আলী আকবর জানান, ঠিকঠাক ভোট চলছিল। পাঁচশ লোক অতর্কিত হামলা চালায়। ইভিএম ভেঙে ফেলেছে। জানালার কাচ ভাঙচুর করেছে। এটি পরিকল্পিত হামলা। ১৮ বছরের চাকরি জীবনে এমন ঘটনা দেখিনি।  

পাথরঘাটা ওয়ার্ডে মোট ৫ জন প্রার্থী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। এর মধ্যে পুলক খাস্তগীরকে আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়েছে। আর মোহাম্মদ ইসমাইল বালীকে বিএনপি সমর্থন দিয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এদের মধ্যে নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন।  

নির্বাচনে মোট ২৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৭১ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৭ জন। মেয়র পদে ৭ প্রার্থী হলেন- নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন।

এছাড়া মিনার প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন, আম প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আবুল মনজুর, হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম, চেয়ার প্রতীক নিয়ে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ ও হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে খোকন চৌধুরী নির্বাচন করছেন।

নির্বাচন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে মাঠে আছেন ২০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং ৬৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া মোট ১৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও কাজ করছেন চসিক নির্বাচনে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৭৭২ জন্য পুলিশ সদস্য, ২৫ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাবের ৪১টি টিম, পুলিশের রিজার্ভ টিম ও ৩ হাজার ৮০০ আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছেন নির্বাচনী এলাকায়।  

নির্বাচনে ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪১৬টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ ও ৩১৯টি কেন্দ্রকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ১৮ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে ১৬ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।

এবারের নির্বাচনে ২টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এর মধ্যে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিমের মৃত্যুতে ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি। এছাড়া ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থী মো. হারুনুর রশিদ।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২১
এমআর/এআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।