ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চসিক নির্বাচন

আ’লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে বিতর্ক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
আ’লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে বিতর্ক লোগো

চট্টগ্রাম: আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয় বৃহস্পতিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি)। বিভিন্ন অভিযোগের কারণে অনেক বর্তমান কাউন্সিলর বাদ পড়লেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের তালিকা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের দলীয় সমর্থন পেতে ফরম সংগ্রহ করেন মোট ৪০৬ জন। ফরম সংগ্রহ করেন বর্তমান, সাবেক কাউন্সিলরসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক নেতারা।

বর্তমান কাউন্সিলরদের মধ্যে বাদ পড়া তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, সাহেদ ইকবাল বাবু, জহুরুল আলম জসিম, মো. সাবের আহমেদ, মোহাম্মদ হোসেন হিরণ, আবুল ফজল কবির আহমদ, এইচ এম সোহেল, মো. আবদুল কাদেরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। কেউ কেউ হত্যা মামলার আসামি, ভূমিদস্যু।

অভিযোগ থাকার পরেও কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের দলীয় সমর্থন পেয়েছেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন খালেদ, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী নুরুল হক, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন।

কাউন্সিলর হাজী নুরুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কখনও আওয়ামী লীগের কোনো পদে ছিলেন না এবং মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাও নন।

এছাড়া কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডের সদস্য নন এবং ইউনিট কমিটিতেও কোনো পদে ছিলেন না বলে দাবি করেছেন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন।

জানতে চাইলে কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার চৌদ্দ গোষ্ঠী আওয়ামীলীগার। আমি বঙ্গবন্ধু কন্যার আদর্শের সৈনিক। জামালখান ওয়ার্ড আওয়ামীলীগে আমার প্রাথমিক সদস্য পদ আছে। ছাত্রজীবনেও আমি ছাত্রলীগ করেছি। গত ৫ বছরে জামালখান ওয়ার্ডকে হেলদি ওয়ার্ডে পরিণত করেছি। যারা আমার বিরোধীতা করছে, তাদের ব্যাপারে খোঁজ নিলে পরিবারে বিএনপি-জামায়াত সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে। তাদের সন্তানরাই তাদের কথা শুনে না। আমার প্রতি সবার সমর্থন আছে বলেই দলীয় মনোনয়ন পেয়েছি’।

এদিকে বায়েজিদ থানা আওয়ামী লীগের সম্পাদিকা পদে থাকার পরও সংরক্ষিত ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় মনোনয়ন পাননি ফেরদৌস বেগম মুন্নী। তার পরিবর্তে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের দলীয় সমর্থন পেয়েছেন বতর্মান কাউন্সিলর সৈয়দা কাশপিয়া নাহরিন।

আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় সমর্থন পেলেও তিনি কখনও আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠনের নেতা বা কর্মী ছিলেন না বলে দাবি করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

দক্ষিণ পাহাড়তলী ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক গাজী মোহাম্মদ ইউনুছ বাংলানিউজকে বলেন, ১৯৮৭ সাল থেকে আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কখনও দেখিনি কাশপিয়া নাহরিন আওয়ামী লীগ বা সহযোগী কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গত নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হন। তারপর থেকে এলাকায় কোনো কাজও করেননি, জনগণের সঙ্গে ভালো করে কথাও বলেন না। তাকে কেন দল থেকে সমর্থন দেওয়া হলো আমরা বুঝতে পারি না। তার পক্ষে কোন মুখে গিয়ে জনগণের কাছে ভোট চাইবো?

গাজী মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগে কী নেতাকর্মীর অভাব হয়েছে যে- ধরে এনে কাউন্সিলর বানাতে হবে! দলের জন্য যারা দীর্ঘদিন কাজ করেছে তাদের দিলেও তো অন্তত মনকে বুঝাতে পারতাম।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেলেও চসিক নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন একাধিক প্রার্থী। তবে এখনই তারা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে নারাজ।

এরই মধ্যে ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মোরশেদ আকতার চৌধুরী প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেছেন৷ অবশ্য কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে দল। তবে এ মুহূর্তে তা নিয়ে ভাবছেন না প্রার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
এসকে/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।