শুক্রবার (০৬ জানুয়ারি) সকালে বাউবির পিঠা উৎসবে দেখা গেছে রকমারি পিঠাপুলি। এর মধ্যে ছিল পানতুয়া, রস চিতই, পুলি, লস্কর পিঠা, ক্ষিরসা পিঠা, নারকেল পিঠা, ফুলকপির ঝাল পিঠা, ডিমের পিঠা, মুগপাল, ডাল পিঠা, নারকেলের বরফি, পাটিশাপটা ইত্যাদি।
একটি স্টলে চালের গুঁড়া আর হাসের ডিম মিশিয়ে খোলার ওপর ঢেলে দিয়ে খোলাঝাই তৈরি করছিলেন নাসিমা আকতার চৌধুরী। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ইমারেতুননেসা কিন্ডারগার্টেনে কর্মরত তিনি।
নাসিমা বাংলানিউজকে বললেন, বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলে খোলাঝাই বেশ জনপ্রিয়। শীতের মৌসুমে প্রায় ঘরে পিঠাটি তৈরি হয়। খুব বেশি উপকরণ যেমন লাগে না তেমনি সময়ও। ঝটপট তৈরি হয় মজার এ পিঠা। এখানে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
ফারজানা আকতারের স্টলের নাম ‘গুড ফুড’। বললেন, চারটি চুলায় ভাপা পিঠা তৈরি করছি তারপরও কুলাতে পারছি না। যদিও আমাদের ইচ্ছে ছিল ভাপার সঙ্গে খাঁটি রসও দেব। কিন্তু পাওয়া গেল না। তাই মিঠা দিয়েই রসের স্বাদ আনার চেষ্টা করেছি।
উৎসবে ভাপা পিঠা খেতে এসেছিলেন আন্দরকিল্লার ব্যবসায়ী আলী ইমরান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ভেবেছিলাম আসল রস থাকবে ভাপা পিঠার সঙ্গে। কিন্তু পাটালি গুড়ের পিঠা খেয়ে ফিরে গেলাম সেই দাদি-নানির আমলে। আহা কি স্বাদ। এখনো মুখে লেগে আছে।
তিনি বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্ম ফাস্টফুডে আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাদের পিঠা-পুলিতে অভ্যস্ত করা গেলে স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকবে তেমনি ঐতিহ্যও টিকে থাকবে। এসব পিঠাপুলিতে চালের গুড়া, ময়দা, গুড়, চিনি, ডিম আর পানিই উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই ক্ষতিকর কিছু নেই।
বাউবির পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক হায়াৎ হোসেন। তিনি বলেন, পিঠা বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। কৃষিজীবী সমাজব্যবস্থাতে পিঠা তৈরির সূচনা। কারণ তাদের প্রধান ফসল ধান।
তিনি বলেন, পরিবর্তিত সমাজব্যবস্থায় আমাদের অনেক ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। তবে পিঠা-পুলি টিকে আছে।
বাউবির চট্টগ্রাম কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক বদরুল হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাউবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আসাদুজ্জামান উকিল ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ইন্দ্রজিৎ কুণ্ড। নৃত্য পরিবেশন করে শিশুশিল্পী প্রযুক্তা জয়া। আবৃত্তি করেন অঞ্চল চৌধুরী ও মেজবাহ উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৭
এআর/টিসি