ঢাকা, রবিবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০২ জুন ২০২৪, ২৪ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সাতকানিয়া থেকে রমেন দাশগুপ্ত

‘সর্বজনীন’ হতে চান জোবায়ের

রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
‘সর্বজনীন’ হতে চান জোবায়ের ছবি: সোহেল সরওয়ার / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সাতকানিয়া থেকে: সাতকানিয়া পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন মোহাম্মদ জোবায়ের। তবে দলীয় পরিচয় ছাপিয়ে জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সাতকানিয়ায় সর্বস্তরের মানুষের সমর্থন পেতে নিজেকে ‘সর্বজনীন’ বানাতে চান জোবায়ের।



সোমবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের সামনে দেখা হয় জোবায়েরের সঙ্গে।   তিনি সেখানে প্রায় শ’খানেক নেতাকর্মী নিয়ে গণসংযোগ করছিলেন।
  বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে নিজেকে সর্বজনীন করার চেষ্টার আভাস মিলেছে।

জোবায়ের বললেন, আমি সাতকানিয়ার সন্তান।   এই মাটিতে আমার জন্ম।   আমি বড় হয়েছি এখানে।   এজন্য আমি প্রার্থী হওয়ায় সাতকানিয়ার মানুষের মধ্যে প্রচন্ড উৎসাহ কাজ করছে।   আমি একটি দলের প্রার্থী হলেও সবার সঙ্গে আমার সদ্ভাব আছে।   এজন্য আমি সাতকানিয়ার সর্বস্তরের মানুষ, যে যেই রাজনীতিতে বিশ্বাস করুক না কেন, আমি সবার সমর্থন পাচ্ছি।

নিজেকে সর্বজনীন করতে চান কিনা জানতে চাইলে জোবায়ের বলেন, অবশ্যই, নির্বাচনে যখন দাঁড়িয়েছি তখন সব মতের মানুষের সমর্থন আমার লাগবে।   সব মতের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে।

সাতকানিয়ায় জামায়াতের শক্ত ভোটব্যাংক আছে বলে মানুষের মধ্যে ধারণা আছে।   সেই ভোটব্যাংক যাতে এককভাবে বিএনপির প্রার্থীর মার্কায় না পড়ে তার জন্যই জোবায়েরের এ কৌশল বলে মনে করছে মানুষ।

ফরিদুল আলম নামে এক ভোটার বাংলানিউজকে বলেন, জামায়াতের ভোট এবার ভাগ হবে।   আওয়ামী লীগের সাংসদ ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভীকে জামায়াতের একটি অংশ সাপোর্ট করে।   কিন্তু নদভী জোবায়েরকে সমর্থন করেন কিনা তা আমরা জানিনা।   কেননা নদভীর সমর্থিত প্রার্থী ছিল মোহাম্মাদুর রহমান, যাকে দল সমর্থন দেয়নি।   দল সমর্থন দিয়েছে জোবায়েরকে। তাই নদভী যদি সমর্থন দেয় তাহলে জামায়াতের কিছু ভোট জোবায়ের পাবে। ধারণা করছি জামায়াতের ভোট এবার বিএনপি-আওয়ামী লীগে ভাগ হবে।

সাতকানিয়ায় তিনজন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।   এরা হলেন, আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ জোবায়ের (নৌকা), বিএনপির হাজী রফিকুল আলম (ধানের শীষ) এবং জাতীয় পার্টির (এরশাদ) মো.ইউছুপ (লাঙল)।

সাতকানিয়া পৌর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পৌরসভার বিভিন্ন অলিগলি, গ্রামের ঘুপচি পথ, বাজার, দোকান সবখানে তিন প্রার্থীর পোস্টার শোভা পাচ্ছে।   চলতি পথে জোবায়েরের কমপক্ষে পাঁচটি ক্যাম্প চোখে পড়েছে।   অটোরিক্সায় করে জোবায়ের এবং রফিকুলের মাইকে প্রচারণাও চলছে।   এরপরও এলাকায় নির্বাচনী আমেজের মধ্যে কিছুটা ঘাটতি দেখা গেছে।   মানুষের মধ্যে যেন নিস্পৃহ ভাব।

পৌরসভার আনু ফকির দোকান এলাকায় গিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে এর নেপথ্য কারণ।   সাধারণ মানুষের মধ্যে বর্তমান পৌর মেয়র হাজী মোহাম্মদুর রহমানের এখনও ভাল সমর্থন আছে।   গতবার বিএনপি থেকে নির্বাচিত মোহাম্মদুর এবার আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নমিনেশন চেয়েছিলেন।   কিন্তু নমিনেশন না পেয়ে নির্বাচন থেকে বিরত আছেন।

শাহ আলম বলেন, এবার মানুষের মধ্যে নির্বাচনের আমেজ নেই। মানুষ মনমরা হয়ে আছে।   মানুষ যাকে (মোহাম্মাদুর রহমান) ভালবাসে তাকে নমিনেশন দেয়া হয়নি। তাই নির্বাচনের প্রতি মানুষের আগ্রহ নাই।

মোহাম্মদুকে হটিয়ে আওয়ামী লীগের নমিনেশন আদায় করে নিয়েছেন জোবায়ের।   কিন্তু  মোহাম্মদুরের প্রতি মানুষের ভালবাসা জোবায়েরের বিপক্ষে যেতে পারে বলেও ধারণা করছেন সাধারণ ভোটাররা।  

সাতকানিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ৩ জন মেয়র পদে, ৩৩ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৫ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। ৩২ হাজার ৯৭০ জন ভোটার ১২টি কেন্দ্রে ভোট দেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
আরডিজি/টিসি

** ‘জোবায়ের ভালা পোয়া, রফিকুরে ন’চিনি’
** ‘এক খিলি ফানও কেওর তুন ন’হাইর’
** ভোটের আগেই ‘মেয়র সাব’ সেলিমুল!
** কৌশলী প্রচারণায় ‘কমরু’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad