ঢাকা, রবিবার, ২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ জুন ২০২৪, ০৮ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রিকশা চালকের লাশ নিয়ে তিন থানার রশি টানাটানি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৪
রিকশা চালকের লাশ নিয়ে তিন থানার রশি টানাটানি

চট্টগ্রাম: তিন থানার রশি টানাটানিতে অপমৃত্যুর শিকার এক রিকশা চালকের দাফন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তার স্বজনরা।  

বৃহষ্পতিবার রাতে ওই ব্যক্তি নিহত হলেও শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা পর্যন্ত লাশটির ব্যাপারে কোন ডায়েরি বা মামলা নথিভুক্ত করতে পারেনি পুলিশ।



লাশটিকে নথিভুক্ত করতে বিবাদে জড়িয়েছে নগরীর ডবলমুরিং, খুলশী ও জিআরপি থানা।   অপমৃত্যুর দায় এড়াতে এক থানার কর্মকর্তারা অপর থানার ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।


মোস্তফা কামাল পারভেজ (২৩) নামে ওই রিকশা চালক ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। তার বাড়ি কুমিল্লার লাঙ্গলকোট এলাকায়, বাবার নাম বদিউল আলম। সে খুলশী থানাধীন রেলওয়ে কলোনির একটি ভাড়া বাসায় থাকে বলে জানিয়েছেন ডবলমুরিং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) উজ্জ্বল।

তিনি জানান, ওই রিকশা চালক গতকাল সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলেন।   সকালে খুলশী আমবাগানের নিকটবর্তী ঝর্ণার পাড়ায় রেললাইনের অদূরে লাশটি দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়।

“লাশটির মাথায় তিন ইঞ্চি পরিমাণের একটি স্টেপ আছে। এটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতেও হতে পারে, আবার ট্রেনের ধাক্কায়ও হতে পারে। ”

পুলিশ সূত্র ও এলাকাবাসী জানায়, এলাকাটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় প্রতিটি থানায় তাদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করলে লাশটি ওই স্থানেই পড়ে থাকে।   পুলিশের এই রশি টানাটানির একপর্যায়ে স্থানীয় জনতা লাশটিকে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়।

লাশের ব্যাপারে জানতে চাইলে খুলশী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তরিকুল বাংলানিউজকে জানান, লাশটি যে স্থানে পাওয়া গেছে তা ডবলমুরিং থানা এলাকায় পড়েছে। তারপরও আমাদের একজন উপ-পরিদর্শক ঘটনাস্থলে রয়েছেন।

একইসময় ডবলমুরিং থানার ওসি মতিউল ইসলাম ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, লাশ যেখানে ছিল স্থানটি কোন থানায় পড়েছে তা চিহ্নিত করতে একটু সমস্যা হচ্ছে।   তাছাড়া, ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়রা সেটি খুলশী থানাধীন এলাকায় নিয়ে গেছে।   তবে, তিন ‍থানার কর্মকর্তারাই ঘটনাস্থলে রয়েছেন।   নিজেদের মধ্যে আলাপ করে লাশের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

“সীমানা তো আর দেয়াল দিয়ে চিহ্নিত করে দেয়া হয়নি, যার কারণে অনেক সময় এ ধরণের ঝামেলা সৃষ্টি হয়। ”

রেলওয়ে থানার (জিআরপি) এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, রেললাইনের উভয় পাশে ১০ ফুট এলাকা জিআরপির আওতায়। কিন্তু লাশটি পাওয়া গেছে প্রায় ১৬ ফুট দূরে।

“আমাদের ওপর দায়ভার চাপানোর কোন সুযোগ নেই, এটা খুলশী আর ডবলমুরিংয়ের বিষয়। তাছাড়া,ট্রেনের ধাক্কায়ও সে মারা যায়নি, লাশটির মাথায় কোঁপের আঘাত থেকেই তা বোঝা যায়। ”

সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রেলওয়ে থানার ওসি হিমাংশু কুমার দাশ বাংলানিউজকে বলেন, লাশটির ব্যাপারে শোনেছি। আমাদের একজন অফিসার গেছে। ফিরলে বিস্তারিত বলা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।