চট্টগ্রাম: বস্তাভর্তি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় আলোচিত রেলওয়ের সাবেক মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী মৃধাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
আলোচিত রেল কর্মকর্তা ইউসুফ আলী মৃধার বিরুদ্ধে এই প্রথম কোন মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে।
সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এস এম মুজিবুর রহমানের আদালতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ফুয়েল চেকার পদে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের হওয়া এ মামলায় সাক্ষ্য দেন মামলার বাদি দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুর রেজা।
আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে বাদি জানান, ২০১২ সালের ১২ এপ্রিল টাকার বস্তাসহ একটি গাড়ি বিজিবি সদর দপ্তরে ঢুকিয়ে দেয়ার ঘটনা ব্যাপক আলোচিত হয়।
এরপর বাদি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ফুয়েল চেকার পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে আদালতে বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো.ওমর ফুয়াদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘অভিযোগ গঠনের পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ (সোমবার) বাদির আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আগামী ৪ মার্চ পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত। ’
এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি মৃধাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরুর ঘোষণা দেন।
অভিযুক্ত বাকি চারজন হলেন, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান এবং অবৈধভাবে নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা দু’প্রার্থী আবুল কাশেম ও আনিসুর রহমান। আসামীরা সবাই পলাতক আছেন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ফুয়েল চেকার পদে নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের তিন কর্মকর্তাকে আসামী করে ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর কোতয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুর রেজা।
আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সরকারী কর্মচারী হয়েও পরস্পরের যোগসাজশে ফুয়েল চেকার পদে নিয়োগ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষার খাতা ও টেবুলেশন শিটের ফলাফল ঘষামাঝা করে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীকে নিয়োগ না দিয়ে ফেল করা প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ ও অনুমোদন করেন।
২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট তিন কর্মকর্তার সঙ্গে নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা দু’জনকে আসামী করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আসামীদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬৬, ১৬৭, ৪৭৭ (ক), ২১৭ ও ১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল সুরঞ্জিতের এপিএসের গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা পায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জওয়ানরা। এ সময় ওই গাড়িতে অভিযুক্ত ওই দু’জন ছাড়াও রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর ঢাকা বিভাগীয় কমান্ড্যান্ট এনামুল হকও ছিলেন। সে রাতে ফারুকের গাড়ি চালক আলী আজম বিজিবি দফতরে টাকাসহ গাড়িটি ঢুকিয়ে দেন। ঘটনার পরদিন থেকে আলী আজম ‘রহস্যজনকভাবে’ নিখোঁজ আছেন।
পরে ওই ঘটনার জেরে রেলমন্ত্রীর পদ ছাড়েন সুরঞ্জিত। বরখাস্ত হন ফারুক এবং সাময়িক বরখাস্ত হন মৃধা ও এনামুল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৪