চট্টগ্রাম: প্রেমিক এবং তার বন্ধুকে আর্থিক সহযোগিতা দিতে নিজের আড়াই বছরের ফুপাত ভাইকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের কৌশল নিয়েছিলেন ফারিয়া তাসনীম প্রকাশ সূচনা (১৮) নামে এক তরুণী। কিন্তু অপহরণের ১১ ঘণ্টার মাথায় ফারিয়াসহ চারজনকে আটক করে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর থানার হালিশহর আবাসিক এলাকার ‘কে’ ব্লক থেকে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সিএণ্ডএফ ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন খানের আড়াই বছর বয়সী ছেলে মুক্তাফিল তাসভি অপহরণের শিকার হয়।
রাত দেড়টার দিকে তাকে নগরীর আমবাগান রেলওয়ে কলোনি এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আটক হওয়া চারজন হল, ফারিয়া তাসনিম প্রকাশ সূচনা (১৮), তার প্রেমিক আল আমিন (২৫) ও তার বন্ধু আল মামুন (২৫) এবং পোশাক কারখানার কর্মী পারভিন আক্তার (২৫)।
আটক চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হালিশহর থানার ওসি শাহজাহান কবির বাংলানিউজকে জানান, আল আমিন ও তার বন্ধু মামুনের ব্যক্তিগত কাজে বেশকিছু টাকার প্রয়োজন হয়েছিল। টাকার বিষয়টি আল আমিন ফারিয়াকে খুলে বলেন। ফারিয়াও প্রেমিক ও তার বন্ধুকে সহযোগিতা করতে টাকা সংগ্রহের উপায় খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয় তাসভিকে অপহরণের মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হবে।
ওসি জানান, পরিকল্পনামত ফারিয়া সোমবার সকালে হালিশহর বৌবাজার এলাকার বাসা থেকে তার ফুপুর বাসায় বেড়াতে যায়। সেখান থেকে দুপুরে কোচিংয়ে যাবার কথা বলে তাসভিকে নিয়ে বের হন ফারিয়া। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ফারিয়া ফুপুর বাসায় ফোন করে জানায়, বাসা থেকে বের হওয়ার পর একদল অপহরণকারী তাদের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়েছিল। পরে ফারিয়াকে সিআরবিতে নামিয়ে দিয়ে তাসভিকে নিয়ে তারা চলে গেছে।
সোমবার বিকেলেই বিষয়টি হালিশহর থানাকে অবহিত করেন ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন খান। পুলিশ প্রথমে ফারিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন তথ্য আদায় করে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে পুলিশ অভিযানে নামে।
ওসি বলেন, ফারিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদেই আমরা তার জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হই। এরপর তার দেয়া তথ্যমতে টাইগারপাসে আমবাগান রেলওয়ে কলোনিতে অভিযান চালিয়ে আল আমিন ও আল মামুনকে আটক করে। পরে একই কলোনিতে গার্মেণ্টস কর্মী পারভিন আক্তারের বাসা থেকে শিশু তাসভিকে উদ্ধার করা হয়।
ওসি জানান, ফারিয়া গত বছর এইচএসসি পাশ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছে। আল আমিন ও আল মামুন এইচএসসি পাশের পর বেকার অবস্থায় আছে।
এ ঘটনায় হালিশহর থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে ওসি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪,২০১৪