চট্টগ্রাম থেকে: শুনশান ভবন। পড়ে আছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি।
৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে কারখানা তৈরি করলেও তা এখন কেবলই স্থিরচিত্র বলে জানান শাহ আমানত নিটিং অ্যান্ড ডাইং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের উদ্যোক্তারা। কারখানায় কাজ না চললেও বেড়ে চলেছে ব্যাংকের ঋণ। ভবিষ্যত নিয়ে তাই যেন কেবল অন্ধকার দেখছেন শাহ আমানত কারখানার কর্মকর্তারা।
শাহ আমানত নিটিং অ্যান্ড ডাইং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের কাজ সম্পন্ন হয় ২০০৮ সালে। তারপর থেকে প্রায় ৫ বছর ধরে অলস পড়ে আছে এই কারখানা।
কারখানা অলস পড়ে থাকলেও প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা করে ব্যাংক লোনের সুদ গুনতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের মধ্যে ৩০ কোটি টাকা ব্যাংকঋণ রয়েছে কারখানাটির।
কারখানাটি চালু হলে প্রায় ১ হাজার থেকে দেড় হাজার লোকের কর্মসংস্থান হতে পারে বলে জানান প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোহাম্মদ সাদিক।
মোহাম্মদ সাদিক বাংলানিউজকে বলেন, বিনিয়োগ করেছি, কিন্তু আয় হচ্ছে না। আমাদের সব প্রস্তুতি থাকলেও গ্যাসের অভাবে কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের অন্যান্য ব্যবসা থেকে টাকা নিয়ে ব্যাংকঋণের কিস্তি দিতে হচ্ছে। এভাবে খুব বেশি দিন চালাতে পারবো বলে মনে হচ্ছে না।
একই অবস্থা দেখতে পাওয়া যায় এরিনা কম্পোজিট ও স্পিনিং ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রেও। কারখানাটির ভবন, মেশিনারি থাকার পরও গ্যাসের অভাবে ৩০ কোটি টাকার বিনিয়োগ থমকে আছে। প্রতিষ্ঠানটির মোট বিনিয়োগের ২০ কোটি টাকাই হচ্ছে ব্যাংকঋণের। উৎপাদনের জন্য কারখানা তৈরি করলেও আয় হচ্ছে না এক টাকাও। কিন্তু প্রতি মাসে ব্যাংকঋণের সুদ প্রদান করতে হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা বলে জানান কারখানাটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এরিনা কম্পোজিট ও স্পিনিং ইন্ডাস্ট্রি লিমিডের কাজ শুরু হলে প্রায় ১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে কারখানাটিতে।
অন্যদিকে কেডিএস টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের ৬ কোটি টাকার একটি কারখানা গ্যাসের অভাবে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা গেছে বিকেএমইএ’র সূত্রে।
কেডিএস ছাড়াও শাহ আমানত নিটিং অ্যান্ড ডাইং ইন্ডাস্ট্রি, এরিনা কম্পোজিট ও স্পিনিং ইন্ডাস্ট্রির মতো আরো বেশ কিছু কারখানাও উৎপাদনের জন্য প্রায় তৈরি থাকলেও গ্যাসের অভাবে কাজ শুরু করতে পারছে না। এতে বিনিয়োগ রয়েছে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। তার পাশাপাশি এসব কারখানা চালু হলে প্রায় ৫ হাজার মানুষের নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলে জানা যায় বিকেএমইএ থেকে।
বিকেএমইএ’র চট্টগ্রামের আঞ্চলিক কমিটির চেয়ারম্যান শওকত ওসমান বাংলানিউজকে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কারখানাগুলোতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধের পর আর তা চালু হয়নি। কিন্তু গ্যাস সংযোগের অভাবে ব্যবসায়ীদের অনেক বিনিয়োগ কোনো কাজেই আসছে না। এ বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়া উচিৎ। কারণ, এসব কারখানা মানে কেবল ব্যবসা নয়, হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানও। তা না হলে ব্যবসায়ী ও এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা ভবিষ্যতে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হবেন বলে মন্তব্য করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৩