চট্টগ্রাম: একক আবৃত্তি আর বৃন্দের মধ্য দিয়ে সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের হাতে সনদপত্র তুলে দিয়েছে বাচিক শিল্প চর্চা কেন্দ্র তারুণ্যের উচ্ছ্বাস।
শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠানটির শুদ্ধ উচ্ছারণ ও আবৃত্তি কর্মশালার সপ্তম সমাবর্তনে তাদের হাতে সনদ তুলে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘কবিতা মানুষের মনকে সুন্দর ও সরল করে দেয়।
তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের সভাপতি জিন্নাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবর্তনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আনোয়ারা আলম এবং ইঞ্জিনিয়াস ইনস্টিটিউশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার।
আনোয়ারা আলম বলেন,‘কবিতায় সমাজের অবহেলিত, নিষ্পেষিত এবং শোষিত মানুষের কথা সাবলীলভাবে ফুটে উঠে। পাশাপাশি শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কিংবা প্রেমের জাগরণও কবিতার মধ্যে থাকে। ’
সমাজিক দ্বায়বদ্ধতা থেকে জাতির সংকটকালীন মুহূর্তে সংস্কৃতি কর্মীদেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন,‘শুধুমাত্র পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা একজন ছাত্রকে শুদ্ধ মানুষ রূপে গড়ে তুলতে পারে না। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চা তাদেরকে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। ’
তিনি বলেন,‘শিল্পের সাংগঠনিক চর্চা আমাদেরকে সংঘবদ্ধ হয়ে ভাল কাজে উদ্বুদ্ধ ও মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরির শিক্ষা দেয়। ’
সমাবর্তনে তিনটি বিভাগে ৫২ জন উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর হাতে সনদ তুলে দেয়া হয়। এদিকে প্রতিষ্ঠানটির সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সমাবর্তন উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনে বসেছিল শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে তরুণ আবৃত্তি শিল্পীদের মিলনমেলা।
শিশু-কিশোর ছাড়াও তরুণ আবৃত্তিশিল্পীদের কণ্ঠে একক ও বৃন্দ কবিতার উচ্চারণে উত্সব মুখর ছিল গোটা শিল্পকলা অঙ্গন। আর মিলনায়তনপূর্ণ বিমোহিত দর্শক-শ্রোতারা ছিলেন মুগ্ধ ।
অনুষ্ঠানে পরবর্তীতে সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় সনদপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবৃত্তি করেন সুমিতা দেবী, সফল বড়ুয়া, শিউলী চৌধুরী, সংগীতা দেবী, স্বপ্নীল বড়ুয়া, অণির্বান চৌধুরী, মোহাম্মদ আলাউদ্দীন, আনিসুল হক, মিথিলা হক, সাইমুন নাহার স্মরণী, তানজিনা আলম, মিফতাহুল জান্নাত, তুর্নেশা সাহা, মার্জিয়া আলম, অর্পিতা মুহুরী, ইসরাত জাহান তামান্না এবং রাজমনী সেন।
একক পরিবেশনায় শিল্পীরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাধারণ মেয়ে, পূজার সাজ, সুবোধ সরকারের দুব্বো, হুমায়ূন আহমেদের জোছনা, জয় গোস্বামীর স্বর্গ, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবত্তীর অমলকান্তি, হুমায়ন আজাদের আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো এবং নির্মলেন্দু গুণের স্বাধীনতা উলঙ্গ কিশোরসহ বিভিন্ন কবিতা আবৃত্তি করেন।
এরপর তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের সাধারণ সম্পাদ মুজাহিদুল ইসলামের নির্দেশনায় বড়দের বিভাগ-১ এ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সোনার তরী কবিতা বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিক্ষার্থীরা।
বৃন্দ আবৃত্তিতে বড়দের বিভাগ-২ এ শামীমা ইয়াসমিনের নির্দেশনায় কাজী নজরুল ইসলামের কান্ডারী হুঁশিয়ার পরিবেশন করেন।
এছাড়া শ্রাবণী দাশগুপ্তার নির্দেশনায় হাসি সিদ্দীকির গ্রন্থনায় তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের শিশুশিল্পীরা আলোর পাখির গান পরিবেশন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৪
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর।