ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে গণজাগরণ মঞ্চের মশাল মিছিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৪
সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে গণজাগরণ মঞ্চের মশাল মিছিল ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: দেশজুড়ে অব্যাহত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে শনিবার চট্টগ্রামে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল করেছে গণজাগরণ মঞ্চ।

সমাবেশে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের সকল ঘটনার দ্রুত বিচার এবং বাহাত্তরের সংবিধান পুর্নবহালের দাবি জানানো হয়েছে।



শনিবার বিকেলে নগরীর চেরাগি চত্বরে আয়োজিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বিশিষ্ট নাগরিক এবং প্রগিতশীল বিভিন্ন ছাত্র-যুব সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী রাজাকার পুর্নবাসনের জন্য বিএনপি নামের একটি দল গঠন করে।
সেই দলের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে মৌলবাদী সরীসৃপ বারবার ফণা তুলেছে। আর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী শক্তি হিসেবে পরিচিত যে আওয়ামী লীগ তারা ভোটের রাজনীতির জন্য এ সরীসৃপকে বারবার প্রশ্রয় দিয়েছে, সহনশীল মনোভাব দেখিয়ে তাদের শক্তিকে সংহত করেছে।

বক্তারা আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ক্ষমতার রাজনীতি করতে গিয়ে আপনাদের ঘরেও অনেক বিষাক্ত ধর্মান্ধ কালসাপ ছদ্মবেশে ঢুকে গেছে। ঘর থেকে এসব কালসাপ বের করে দিন, দুর্নীতিবাজদের বিদায় দিন। আপনাদের শরীরে কলংক লাগলে তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়ও লাগে।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল সকল ধর্মবিশ্বাসীর বুকের রক্তে। একাত্তরের সকল বিশ্বাস মিলেছিল এক মোহনায়। কিন্তু দু:খজনক সত্য হচ্ছে, সমাজ থেকে আমরা সাম্প্রদায়িকতার বীজ পুরোপুরি উৎপাটন করতে পারিনি। সাম্প্রদায়িকতার শেকড় অনেক গভীরে চলে গেছে। এ শেকড়কে নির্মূল করতে জাতি, ধর্ম নির্বিশেষ সবাইকে দেশপ্রেমের চেতনায় এক কাতারে দাঁড়াতে হবে।

বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে সেগুলোসহ স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যত ঘটনা ঘটেছে সবগুলোর বিচারের জন্য অবিলম্বে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। জামায়াত-শিবিরকে যত দ্রুত সম্ভব সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি সংবিধানে থাকা সাম্প্রদায়িক ধারাগুলো বিলুপ্ত করে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যেতে হবে।

গণজাগরণ মঞ্চ-চট্টগ্রামের সদস্য সচিব ডা.চন্দন দাশের সভাপতিত্বে এবং আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসানের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, শিক্ষক নেতা অধ্যাপক অশোক সাহা, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, গণজাগরণ মঞ্চ-চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী শরীফ চৌহান, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব, জেলা ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক আশীষ ভৌমিক, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রমৈত্রীর সদস্য সচিব পার্থপ্রতীম নন্দী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য জাহিদুর রহমান সোহেল প্রমুখ।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ডা.মাহফুজুর রহমান, উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুনীল ধর, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী রুপক চৌধুরী, আবৃত্তিশিল্পী মিলি চৌধুরী, প্রত্যয়’৭১ এর সাধারণ সম্পাদক সলিল চৌধুরী, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী তরুণ উদ্যোগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউসুফ সোহেল ও রুবেল দাশ, জেলা যুব মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক কায়সার আলম, মুক্তিযোদ্ধা উদয়ন নাগ, শ্রমিক নেতা রাহাতউল্লাহ জাহিদ, প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পাল, শিক্ষিকা সালমা জাহান মিলি, চেতনা’৭১ এর আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ রায় দাশ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৪
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।