ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ ভাদ্র ১৪৩২, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জ্ঞান ফিরলেও কথা বলতে পারছে না সেই দুই কিশোর!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:২৭, আগস্ট ২৬, ২০২৫
জ্ঞান ফিরলেও কথা বলতে পারছে না সেই দুই কিশোর! আহত দুই কিশোর

চট্টগ্রাম: ফটিকছড়িতে চোর সন্দেহে মারধরের ঘটনায় আহত দুই কিশোরের জ্ঞান ফিরলেও এখনও কথা বলতে পারছে না। চিকিৎসকেরা বলছেন আরও ৪৮ ঘণ্টা না গেলে শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না তাদের।

গত ২২ আগস্ট চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে তিন কিশোরকে গণপিটুনি দেওয়ার পর একজন মারা যায়, আহত হয় দুইজন। আহত ইসমাইল হোসেন মানিককে ভর্তি করানো হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে।

আরেক বন্ধু ফারহান তানভীর রাহাত ভর্তি রয়েছে অর্থপেডিক্স ওয়ার্ডে।

প্রায় ৫ দিন চিকিৎসা চললেও এখনো অবস্থার খুব একটা উন্নতি নেই তাদের। আর এতেই দুশ্চিন্তায় পরিবার পরিজন।

মানিকের মা রোজিনা আক্তার বাংলানিউজকে জানান, বেড়াতে গিয়েছিল তারা। সিএনজি থেকে নামার পরে তাদের চোর সন্দেহে মারধর করা হয়। ৫ দিন হতে চলছে হাসপাতালে এসেছি। জ্ঞান ফিরেছে দুই দিন হলো এখনও কথা বলতে পারছে না। কোনো খাওয়া দাওয়া নেই।

মানিকের বাবা নাইট গার্ডের চাকরি করেন চট্টগ্রাম শহরে। ৫ সদস্যের পরিবারে মানিক সবার ছোট। হঠাৎ এমন ঘটনায় হতভম্ব তার পরিবার। ছেলের এমন অবস্থায় মা রোজিনার চোখের পানি ঝরছে আঝোরে। চিকিৎসার খরচ জোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তার।  

ধার দেনা করে একমাত্র ছেলের চিকিৎসা করাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো দোষ না থাকার পরও আমার ছেলেকে তারা এভাবে মারধর করেছে। আমার ছেলের এ অবস্থার পেছনে যারা জড়িত তাদের বিচার চাই।

অন্যদিকে হাসপাতালে অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রাহাতের অবস্থাও অপরিবর্তিত। ছেলের এমন অবস্থা মেনে নিতে পারছেন না মা রোজী আক্তারও।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, খবর পাওয়ার পর ৯৯৯ এ ফোন করে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। এরপর তাদের ছেড়ে দেয়। হাসপাতালে আনার পর তার (রাহাত) জ্ঞান ছিল না। দুই দিন হলো জ্ঞান ফিরেছে কিন্তু এখনও কথা বলতে পারছে না সে।

তিনি বলেন, তার (রাহাত) বাবাও চার বছর ধরে অসুস্থ। কোনো কাজ করতে পারেন না। টানাপোড়েনের সংসারে তার চিকিৎসা ব্যয়ও বহন করা খুবই অসম্ভব। তারপরও খুবই কষ্ট করে চিকিৎসা খরচ জোগাড় করতে হচ্ছে।

জানা গেছে, মাহিনের পরিবারের সঙ্গে আগে থেকে বিরোধ ছিল ঘটনায় জড়িত মূল আসামি নাজিম উদ্দিনের। স্থানীয় জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী উচ্চ বিদ্যালয়ের এই সহকারী শিক্ষকসহ এলাকার আরও কয়েকজন মিলে দফায় দফায় মারধর করেন তাদের। । মাহিন হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে নিহত মাহিনের মা খদিজা বেগম বাদী হয়ে ফটিকছড়ি থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে পাঁচজনের নামসহ অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।  

এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।