চট্টগ্রাম: ঈদুল আজহা’র বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। এরইমধ্যে চামড়া সংগ্রহের প্রস্তুতি শুরু করেছেন কাঁচা চামড়ার আড়তদাররা।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) তথ্য মতে, চট্টগ্রাম জেলায় কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণে লবণের লক্ষ্যমাত্রা ৫ হাজার ৮৪৩ মেট্রিক টন। এবছর লবণ মজুদ আছে ৬ হাজার ৫৮২ মেট্রিক টন। এছাড়া অপরিশোধিত লবণের মজুদ রয়েছে ৬৬ হাজার মেট্রিক টন, যা দিয়ে সারাদেশের লবণের চাহিদার একটি বিরাট অংশ পূরণ করা যাবে।
বিসিক কক্সবাজার লবণ শিল্প উন্নয়ন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদিত হয়েছে ২২ লাখ ৫১ হাজার ৬৫১ টন। গত ২০২৩-২৪ মৌসুমে লবণ উৎপাদিত হয়েছিল ২৪ লাখ ৩৭ হাজার ৮৯০ টন। সরকারিভাবে এ বছর দেশে লবণের চাহিদা ধরা হয়েছে ২৬ লাখ ১০ হাজার টন।
বিসিক চট্টগ্রাম জেলার উপ মহাব্যবস্থাপক এস এম এম আলমগীর বাংলানিউজকে জানান, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রামে যে পরিমাণ পশু কোরবানি হবে তার রেশিও অনুযায়ী লবণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। সে অনুযায়ী লবণের মজুদ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি রয়েছে। ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া অপরিশোধিত লবণের মজুদও পর্যাপ্ত রয়েছে।
এদিকে লবণের দামও রয়েছে নিয়ন্ত্রণে। সরকার এ বছর প্রতি কেজি লবণের দাম নির্ধারণ করেছে ১২-১৫ টাকা। তবে বিসিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাঠ পর্যায়ে এখন প্রতিমণ লবণ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে এ দর ছিল ২০০ টাকা।
বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নূরুল কবীর বাংলানিউজকে বলেন, লবণ সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। চামড়া ব্যবসায়ীরা গত মাস থেকেই লবণ নেওয়া শুরু করেছে। প্রায় ৩০ হাজার টনের মতো বিক্রি হয়েছে। চাহিদা বাড়লে অনেক সময় দামও কিছুটা বাড়ে। তবে এবার চাহিদা ও সরবরাহ-দুটোই ভালো রয়েছে। তাই ঈদের সময় লবণের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক থাকবে। এ বছর চট্টগ্রামে প্রতি বস্তা (৭৪ কেজি) লবণ বিক্রি হচ্ছে ৮১০-৮৫০ টাকায়।
লবণের দাম স্থিতিশীল থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম চামড়া আড়তদার সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুসলিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, লবণের দাম কমায় চামড়া কেনা ও সংরক্ষণে আমাদের সুবিধা হয়েছে। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৫০ শতাংশ লবণ কিনেছি। বাকি লবণ কেনার প্রক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত, চলতি মৌসুমে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী, সদর, পেকুয়া, চকরিয়া, ঈদগাঁও ও টেকনাফে ৫৯ হাজার ৯৯ একর এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা ও পটিয়ায় ১০ হাজার ৮৯ একর জমিতে লবণ উৎপাদন হয়েছে। চাষির সংখ্যা ৪১ হাজার ৩৫৫ জন। গত বছর একই এলাকায় লবণ উৎপাদন হয় ৬৮ হাজার ৫০৫ একর জমিতে।
এমআর/টিসি