ঢাকা, শনিবার, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ৩১ মে ২০২৫, ০৩ জিলহজ ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বিমানে বোমা উদ্ধারের মহড়া শাহ আমানতে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:২৫, মে ২৯, ২০২৫
বিমানে বোমা উদ্ধারের মহড়া শাহ আমানতে ...

চট্টগ্রাম: শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি এক্সারসাইজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ মহড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল কোনো এয়ারক্রাফটে বোমা বা বোমা সদৃশ বস্তু পাওয়া গেলে যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া এবং বোমা উদ্ধার প্রক্রিয়া অনুশীলন করা।

আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, হাইজ্যাক, অগ্নি নিরাপত্তা ও বোমা হামলাসহ বিভিন্ন ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা মূল্যায়নে প্রতি দুই বছর অন্তর এমন মহড়ার আয়োজন করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে অনুষ্ঠিত মহড়ায় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক), বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, সিএমপি, বাংলাদেশ আনসার, বাংলাদেশ কাস্টমস, বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশ, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল, বিমানবাহিনী মেডিক্যাল টিম, অর বিমানবন্দরের মেডিক্যাল টিম, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং অন্যান্য সংশ্লির সংস্থা একযোগে অংশ নেয়।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, নিরাপত্তা মহড়ার জন্য কোনো বেসামরিক বিমান না পাওয়ায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতায় বিমান বাহিনীর এয়ারক্রাফট AN-32 এবং বিমানবাহিনীর সামরিক হেলিকপ্টার MI- 17 এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ মহড়াটি সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।

মহড়ার দৃশ্যে দেখা যায়, ৩০ জন যাত্রী এবং ৫ জন ক্রুসহ একটি বিমান যার কাল্পনিক কল সাইন নেপচুন-৭৮৯ শাহ আমানত বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। শাহ আমানতে অবতরণের ২৫ মিনিট আগে বিমানবন্দরের এটিসি টাওয়ারে একটি অপরিচিত ফোনকলে জানানো হয় ফ্লাইটটিতে বোমা রয়েছে। এরপর ক্লাসিফিকেশন কমিটির মিটিংয়ে থ্রেট অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে বোমার সত্যতা পাওয়া গেলে কর্তৃপক্ষ সহযোগী বিভিন্ন সংস্থাকে ফোনকলে বিষয়টি জানায় এবং দ্রুততম সময়ে সহযোগিতা চায়।  

ইতিমধ্যে ফ্লাইটটি ল্যান্ড করলে ক্রুসহ ৩৩ যাত্রীকে সুস্থ অবস্থায় নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়। ক্রিটিক্যালি আহত একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিশেষ হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার বিশেষায়িত হাসপাতালে পাঠানো হয়।  

মহড়াতে প্রথমেই দেখা যায়, কীভাবে বিএএফের বোম ডিসপোজাল ইউনিট অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত টিম দিয়ে এয়ারক্রাফট থেকে বোমাগুলোর অবস্থান নিশ্চিত হয় এবং ২টি বোমা উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে আসে। এরপর বিএএফ এবং সোয়াডসের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়। সবশেষে বিমানবন্দর নিরাপদ হিসেবে স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই মহড়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।  

তিনি উল্লেখ করেন, এভসেক সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবৎ আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ করে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিয়মিত মহড়া পরিচালনা করে আসছেন।  

তাঁর মতে, যথাযথ প্রস্তুতি ছাড়া কোনো কার্যক্রম কার্যকরভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়, আর তাই প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত অনুশীলন অপরিহার্য।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উচিত সময়োপযোগী মহড়ার মাধ্যমে নিজেদের প্রস্তুতি ও সক্ষমতা যাচাই করা। তারই নির্দেশনা হিসেবে আজকের এই মহড়ার আয়োজন।  

এ মহড়ায় দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় তিনি বিষয়টিকে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে অভিহিত করেন। বিভিন্ন সংস্থার সম্মিলিত ও সমন্বিত প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি সুচারুভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান অতিথি অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলোর দক্ষতা ও প্রস্তুতির প্রশংসা করে বলেন, প্রত্যেকের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত সন্তোষজনক।  

তিনি জাতীয় স্বার্থে আরও দায়িত্বশীল ও আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন বেবিচক, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, স্থানীয় জেলাপ্রশাসন ও বিভিন্ন এয়ারলাইনস সহ মহড়ায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা।

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।