ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

গরমে সবার প্রাণ ওষ্ঠাগত

সোহেল সরওয়ার, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৪
গরমে সবার প্রাণ ওষ্ঠাগত ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: বলা হয়ে থাকে, মানুষ সারাজীবন যে অক্সিজেন নেয়, তা সরবরাহ করতে মাত্র আটটি গাছই যথেষ্ট। অথচ পাহাড়-বনঘেরা চট্টগ্রামে চলছে এসব প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসের উৎসব।

চলমান তীব্র তাপপ্রবাহ ও গরম অনুভূত হওয়ার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি বায়ু দূষণও দায়ী বলে মনে করেন আবহাওয়াবিদরা। সবার আগে সবুজায়ন অর্থাৎ বনভূমি ও জলাভূমি সংরক্ষণ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মত তাদের।

শনিবার (২০ এপ্রিল) আবহাওয়া অধিদপ্তর ৭২ ঘণ্টার জন্য ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করেছে। এর অর্থ, তিনদিন তীব্র গরম সহ্য করতে হবে।  

এই সময় সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন কৃষক, দিনমজুর, রিকশাওয়ালা। আর ঝুঁকি বয়স্কদের, বিশেষ করে যারা অন্য কোনো রোগে ভুগছেন। ঘরের ভেতরেও টেকা দায়। ফ্যানের বাতাসে প্রাণ জুড়ায় না। দোকানে বেড়েছে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী বিক্রি। হাতপাখাও বেশ বিক্রি হচ্ছে।  দাবদাহে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকেরা। শিশুদেরও এই তালিকায় রাখার কথা বলেছেন তারা।  

এমন পরিস্থিতিতে ঈদের ছুটির পর রোববার (২১ এপ্রিল) থেকে স্কুল খোলার কথা থাকলেও এক সপ্তাহ বন্ধ থাকছে। এই তীব্র গরমে স্কুলে সন্তানরা অসুস্থ হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় রয়েছেন অনেক অভিভাবকরা। তারা চলমান তাপদাহ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার দাবি তুলেছেন।

গত শুক্রবার বোয়ালখালীর পশ্চিম শাকপুরা ২ নম্বর ওয়ার্ড আনজিরমার টেক সৈয়দ আলমের নতুন বাড়িতে মোছাম্মৎ সাফা নামের ছয় মাস বয়সী একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মায়ের বুকের দুধ খেয়ে ঘুমানোর কিছুক্ষণ পর শিশুটিকে প্রাণহীন অবস্থায় পায় তার বাবা-মা। ধারণা করা হচ্ছে, সে হিট স্ট্রোকে মারা গেছে।  

এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে গরমের তীব্রতা। তীব্র গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এতে খেটে খাওয়া মানুষ সীমাহীন কষ্ট ভোগ করছেন। দাবদাহ উপেক্ষা করেই মাঠেঘাটে কাজ করছেন তারা, চালাচ্ছেন রিকশা, ঠেলাগাড়ি। রাস্তার পাশে বিক্রি করা শরবত খেয়ে প্রাণ জুড়ানোর চেষ্টা চলে তাদের।

গরমে মানুষের শরীরের ত্বকে যেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তেমনি ধানের খেতে ফাটল ধরেছে। হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ। গরমে কেবল মানুষের প্রাণই ওষ্ঠাগত নয়, পশু-পাখিরাও অতিষ্ঠ।

স্বাভাবিক চলাফেরা বাদ দিয়ে ওরা নেমে পড়ছে পানিতে, আশ্রয় নিচ্ছে ছায়ায়।  একটু প্রশান্তি পেতে ঘন ঘন গা ভেজাচ্ছে পানিতে। বানরকে দেওয়া হচ্ছে আইসক্রিম। পশু-পাখিদের সুস্থ রাখতে নিয়মিত স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কর্মচারীরা।  

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, তাপমাত্রা বেশি থাকায় মাটির নিচের পানির স্তর আরও নিচে নেমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে গরমের তাপমাত্রা যা আছে, তার চেয়ে বেশি অনুভূত হয়। এই মৌসুম ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম। তবে ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ যদি পর্যাপ্ত না হলে গরম কমার সম্ভাবনা নেই।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৪
এসএস/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।