ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘুরেছিল ‘হাকালুকির টর্নেডো’ 

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘুরেছিল ‘হাকালুকির টর্নেডো’  হাকালুকি হাওরের জল টর্নেডো

মৌলভীবাজার: দেশের সর্ববৃহৎ জলাভূমি মৌলভীবাজার জেলা হাকালুকির হাওরের ভেতর হঠাৎ করে সৃষ্টি হয়েছিল পানির ঘূর্ণায়ন বা জল টর্নেডো। হাকালুকির টর্নেডো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

 

শনিবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যার পূর্ব মুহূর্তে হঠাৎ করে হাকালুকি হাওরের চাতলাবিল ও বাইলাকান্দির মধ্যস্থলে জলস্তম্ভ বা জল টর্নেডো শুরু হয়। এমন দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়া উপজেলার হাওর পারের মানুষ। হাওরের জল কুণ্ডলির ন্যায় ঘূর্ণন গতিতে আকাশের দিকে উঠে কালো মেঘের ভেতর গিয়ে প্রবেশ করে। এ অবস্থার স্থায়িত্বকাল ছিল প্রায় ১০ মিনিট।

হাওর পাড়ের মানুষ প্রথমবারের মতো টর্নেডো প্রত্যক্ষ করেন ও অনেকেই মোবাইলফোনে তা ভিডিও ধারণ করেন। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যেমে ভিডিও ভাইরাল হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার কিছু আগে হঠাৎ দেখেন হাওরের ভেতর পানি ও আকাশ এর মধ্যে হাতিরশুঁড়ের মতো কিছু একটা ঘূর্ণি খাচ্ছে। ঘূর্ণন দুর্বল হয়ে আসার পরই শুরু হয় ঝড় ও বৃষ্টি। অনেকেই এমন দৃশ্য দেখে ভয় পান।

বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের বারোআলি এলাকার ফেসবুকে লাইভকারী মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বেশ কয়েক বছর আগে হাকালুকি হাওরে এ ধরনের দৃশ্য দেখা গিয়েছিল বলে অনেকেই বলেছেন। তিনি এই প্রথম দেখেন ও ভিডিও ধারণ করেন। টর্নেডো দুর্বল হয়ে এলে বৃষ্টি শুরু হয়।

রোববার (২৪ জুলাই) এ বিষয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর, সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমেদ চৌধুরী এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, এমনটা হাওর এলাকায় হতে পারে। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। এটা এক ধরনের টর্নেডো। এটা পানিতে উৎপত্তি হয়েছিল এবং পানিতেই নিঃশেষ হয়ে যায়। এ টর্নেডোর ক্রাইটেরিয়া (গতিপ্রকৃতি) হলো ভেতরের গোলন বা ঘূর্ণায়মান অংশের গতি প্রায় ২০০ কিলোমিটারের মতো। এ টর্নেডো ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘুরে। আর তার নিজের গতিটা প্রায় ৫০ কিলোমিটারের মতো হয়ে থাকে।

এই টর্নেডো ভল্টেজ (বিদ্যুৎ) পেয়ে রোটেড (ঘূর্ণি) আকারে ঘুরতে থাকে। তখন এই জায়গাটা প্রচুর পরিমাণে গরম হয়ে যায়। তখন নিচের পানি ওপরে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে আবার বৃষ্টি আকারে এই পানিটা নিচে পড়ে যায়। এটাই এ টর্নেডোর বৈজ্ঞানিক থিওরি (তত্ত্ব)। এটাকে ইংরেজিতে ‘Waterspout’ বলে এবং বাংলায় ‘পানির ঘূর্ণায়ন’ বলা যেতে পারে বলে জানান আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমেদ চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।