ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

জলবায়ু উদ্বাস্তুদের তহবিলে আরও বৈশ্বিক সহায়তা প্রয়োজন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
জলবায়ু উদ্বাস্তুদের তহবিলে আরও বৈশ্বিক সহায়তা প্রয়োজন ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অভিযোজনে, বিশেষ করে উদ্বাস্তুদের জন্য তহবিল বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জি-২০ এর কাছে জোরালো সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ‘এফ-২০ ক্লাইমেট সলিউশন উইক’ এর ‘রেজিলেন্স অ্যান্ড রিকভারি: হাইলাইটিং সলিউশন ফর দ্য জি-২০ অন ক্লাইমেট অ্যান্ড সাসটেইনাবিলিটি’ শীর্ষক এক উচ্চ পর‌্যায়ের ভার্চ্যুয়াল সভায় এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

 

এফ-২০ এবং কিং খালেদ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সপ্তাহের আয়োজন করে।  

ভার্চ্যুয়াল সভায় শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য অভিযোজন তহবিল বৃদ্ধি করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জি-২০-এর কাছ থেকে শক্তিশালী সমর্থন কামনা করছি।

তিনি বলেন, বাস্তুচ্যুত অথবা জলবায়ু শরণার্থী ইস্যুতে বৈশ্বিক সমর্থন যোগাতে জি-২০ কে বৃহত্তর দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। সবুজ জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ) এবং স্বল্পোন্নত দেশসমূহ তহবিলের (এলডিসিএফ) মতো বৈশ্বিক অর্থায়ন তহবিলে মারাত্মক সম্পদ ঘাটতি অত্যন্ত দুঃখজনক।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু এবং টেকসই পরিবেশ দু’টি বিষয় পারস্পরিক নির্ভরশীল এবং বিশ্ব পণ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ, বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ, বিশ্বের জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ এবং বিশ্বের মোট আয়তনের প্রায় অর্ধেকই হচ্ছে জি-২০ অর্থনীতিভুক্ত।

শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু এবং টেকসই পরিবেশের যেকোনো ভালো ফলাফলের জন্য জি-২০ এর মধ্য দিয়ে যেতে হবে। জি-২০ এর আগে দেখিয়েছে যৌথভাবে তারা বিশ্ব সম্প্রদায়ের সুবিধার জন্য অনেক উপকারী পদক্ষেপ নিতে পারে।  

জলবায়ু পরিবর্তনের দায়ী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব। জলবায়ু পরিবর্তনের সূচনাই হয়েছে মানব কর্মকাণ্ডের ফলে টেকসই পরিবেশ নষ্ট করার জন্য। ফলে মানুষ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বন্যা, বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, তাপপ্রবাহ, ভূমিধস এবং খরার সম্মুখীন হচ্ছে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, টেকসই পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কোনো জায়গায় টেকসই পরিবেশ ভঙ্গুর হলে সব জায়গার টেকসই পুরোপুরি বিঘ্নিত হবে। জলবায়ু পরিবর্তন চূড়ান্ত অস্তিত্বের জন্যই হুমকি এবং এর পরিণতি কাছে ও দূর ভবিষ্যতে আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমূদ্রপৃষ্ঠের উঁচ্চতা বেড়ে যাওয়া এমনকি অর্ধেক মিটারও জলবায়ুর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য হুমকি হতে পারে। এ কারণে একটি উচ্চাভিলাষী সম্মিলিত বৈশ্বিক পদক্ষেপ এ সময়ের জন্য খুবই জরুরি এবং জি-২০ এর সরাসরি সম্পৃক্ততা ছাড়া আমাদের শিশু ও ভবিষ্যতকে সুরক্ষা দেওয়া যাবে না।

সভায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বৃহত্তর সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব সামাল দিতে শক্তিশালী ও গ্রিন মেকানিজম এবং আপহোল্ড সাসটেইনেবিলিটিসহ তিনটি প্রস্তাবও দেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশের আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের কারণে পরিবেশ ও প্রকৃতির মারাত্মক ক্ষতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের কারণে প্রকৃতি ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বাংলাদেশের চেয়ে এ পরিস্থিতি সম্পর্কে কেউ ভালো জানে না।

অনুষ্ঠানের অন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফ-২০ কো-চেয়ার প্রিন্সেস বেসমা বিনতে বদর, কিং খালিদ ফাউন্ডেশন এবং এফ-২০ এর সভাপতি ক্লাউস মাইক।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
এমইউএম/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।