বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক পাখিটি সম্পর্কে বাংলানিউজকে বলেন, এ পাখির ইংরেজি নাম Lineated Barbet এবং আমরা বাংলাদেশে একে ‘দাগি-বসন্ত’ বলি। ২৮ সেন্টিমিটারের এ পাখি আমাদের প্রতিটি পাহাড়ি বনেই রয়েছে।
‘পাখিটি কিন্তু সহজ নয় দেখা, যদিও বড় পাখি। কারণ ওর রংটা গাছের পাতার সঙ্গে একেবারে মিশে যায়। ওর মাথা ও বুক শুধু হালকা খয়েরি। ওটাও চোখে পড়ার মতো রং নয়। আপনি যে কোনো পাহাড়ি বনে ঢোকার আগে এই দাগি-বসন্তের উপস্থিতির কথা সহজেই জানতে পারবেন। কারণ সে খুবই চিৎকার করে ডাকে। উঁচু গলা; তবে তীক্ষ্ম-কর্ষক নয়; বেশ মিষ্টি: ‘পুকুক-পুকুক-পুকুক’ -এ রকম করে ডাকতেই থাকে। বিশেষ করে এই প্রজননের সময় অনেক ডাকে; ফলে বন একেবারে সোরগোল করে মাতিয়ে রাখে এই একটি প্রজাতির পাখি। এই ডাকটা এক মাইল দূর থেকে পর্যন্ত শোনা যায়। এত জোরে ডাকা পাখি বাংলাদেশে খু্বই কম আছে। ’
-Lineated-Barbet_Photo_E20200627070831.jpg)
-Lineated-Barbet_Photo_E20200627070907.jpg)
‘তার মানে ও যদি নতুন কোটর না বানায় তাহলে মেয়ে দাগি-বসন্ত পাখিটি ছেলেটির প্রতি আকর্ষণ তৈরি হবে না। ওর হরমোন রিলিজ (নির্গমন) হবে না, ডিম তৈরি হবে না। গাছের কোটর বানানোটা প্রথমে শুরু করে ছেলে দাগি-বসন্ত। পরে মেয়ে দাগি-বসন্ত এসেও যোগ দেয়। এটা আমন্ত্রণের মতো ব্যাপার একটা। কোটর তৈরির ৯০ শতাংশ কাজ পুরুষ দাগিবসন্তকেই করতে হয়। ’
‘অন্য পাখিদেরও উপকার করে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক পাখি আছে যারা কোটরে বাসা করে; কোটর বানাতে পারে না। ফলে দাগি-বসন্তের ছানাগুলো বড় হয়ে বেরিয়ে চলে গেলেই সে কোটরে শালিক (Myna/Starling) এবং দোয়েল (Oriental Magpie Robin) ওরা ওখানে বাসা করে। ফলে দাগি-বসন্ত পাখিগুলো এভাবে আমাদের প্রকৃতির অন্য পাখিদের অনেক বেশি উপকার করে বলে জানান প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক।
বাংলাদেশ সময়: ৭০০৯ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২০
বিবিবি/এএ